যত দিন যাচ্ছে তত যেন বাড়িতে থাকছে চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা। ঠিক একই রকমভাবে গত ৯ জুন বড়বাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের বাসিন্দা সমীর মান্না। তিনি জানিয়েছিলেন যে হাওড়া স্টেশনের কাছে বাস থেকে নামতেই তাঁকে অপহরণ করেছিলেন পুলিশের পোশাকে চার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। তিনি অভিযোগ করেন যে তাকে একটি সাদা গাড়িতে তুলে সেখান থেকে নিয়ে যায় চারজন ব্যক্তি। তার কাছ থেকে রুপোর গয়না একটি ব্যাগ কেড়ে নেওয়া হয় এবং তাকে নিউটাউন এর কাছে নামিয়ে দেওয়া হয়। আর এই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের।
অভিযোগ পাওয়া মাত্রই ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ এবং ওই সাদা গাড়ির চালক বছর পঁয়ত্রিশের যুবক সঞ্জয়কুমার শাহকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে জেরা করে আরও দু’জনের সন্ধান পায় পুলিশ, ফিরোজ মণ্ডল এবং জয়নগরের আব্দুসালেম শেখ নামে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। আবার তাঁদের জেরা করেই হাওড়া সিটি পুলিশের দুই কনস্টেবল সুরজিৎ সরকার এবং সমীরণ পাত্রকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা। যা দেখে রীতিমতো চক্ষুচড়কগাছ পুলিশের। ওই ঘটনায় এ বার গ্রেফতার করা হল এক ব্যক্তিকে, যিনি এক সময় কলকাতার কসবা থানায় সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তিনি আবার যার নাম করেছেন শুনে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের।
শুক্রবার হাওড়ার জগাছার বাড়ি থেকে সৈকত চট্টোপাধ্যায় নামে যে ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে বরাবাজার থানার পুলিশ সেই ব্যক্তি কে জেরা করে পুলিশ যে নাম পেয়েছে তা রীতিমত অবাক করে দেওয়ার মত। ওই তুই কনস্টেবল একসাথে দাবি করেন যে এই ঘটনায় বি-গার্ডেন থানার ওসিও যুক্ত। যা অবশ্যই অবিশ্বাস্য একটি ব্যাপার যেখানে পুলিশের উপরে এত বড় একটা অভিযোগ উঠেছে।
তদন্তে নেমে পুলিশ বুঝতে পারে, এ যে সর্ষের মধ্যেই ভূত! কোনও ‘দুষ্কৃতী’ দল নয়, এই ঘটনায় আসল চোর পুলিশ নিজেই। পুলিশ জানিয়েছে যে 10 কেজি 400 গ্রাম রুপোর গয়না ছিনতাই হয়েছিল তার মধ্যে ফিরোজের কাছে সাড়ে চার কেজির মত পাওয়া গেছে এবং বাকি গয়না পাওয়া গিয়েছিল ওই দুই কনস্টেবল কে জেরা করে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে এই পুরো ঘটনা কি একটা পুলিশি যোগসাজশ?
ওই দুই কনস্টেবল যেহেতু দাবি করেছেন যে এই ঘটনার সাথে একজন ওসি যুক্ত হয়েছে যা একটি ঘোরতর অভিযোগ, তাদের দাবির এখন সত্য-মিথ্যা বিচার হবে কারণ তাদের দাবি যদি সত্যি হয় তাহলে এই পুরো ঘটনা যদি কোন পুলিশি মাথা দিয়ে চালানো হচ্ছিল তাহলে হতে পারে এর আগেও ওই ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ওসিকে এখন জিজ্ঞাসাবাদে প্রস্তুতি চলছে এবং আসল সত্য খুব শীঘ্রই সামনে আসবে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।