অ্যাশেজের শেষদিনেও অব্যাহত থাকল নাটক। বেন স্টোকসের একটি ‘ক্যাচ’ নিয়ে যেমন বিতর্ক হল, তেমনই একটি দুর্ধর্ষ ক্যাচ নিলেন জনি বেয়ারস্টো। ইংল্যান্ডের উইকেটকিপারের ক্যাচটা দুর্দান্ত হলেও বিতর্ক যেহেতু বরাবরই বেশি লোককে টানে, তাই স্বভাবতই স্টোকসের ‘ক্যাচ’ নিয়ে বেশি হইচই হচ্ছে। সেটা বৈধ ক্যাচ হলে মাত্র ৩৯ রানে আউট হয়ে যেতেন স্টিভ স্মিথ। তবে সেটা কেন আউট হয়নি, তা একেবারে আইন দেখিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসি। যে আইনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে, এরকম ক্ষেত্রে কোনওভাবেই ক্যাচ বৈধ বলা যাবে না। তাতে অবশ্য সন্তুষ্ট হননি ইংরেজরা।
যদিও ম্যাচের ফলাফলে সেই বিতর্কিত ‘ক্যাচের’ কোনও প্রভাব পড়েনি। পঞ্চম অ্যাশেজ টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে ৪৯ রানে হারিয়ে দিয়েছে ইংল্যান্ড।৬৬ তম ওভারের প্রথম বলে সেই ঘটনা ঘটে। মইন আলির বলটা স্মিথের গ্লাভসে লেগে লেগ গালির দিকে উড়ে যায়। লাফিয়ে দুরন্তভাবে বলটা তালুবন্দি করেন ইংরেজ অধিনায়ক স্টোকস। কিন্তু বলটা সঙ্গে-সঙ্গে মাটিতে ছুড়ে দেন বা হাত ফসক বেরিয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে আউট দেননি অনফিল্ড আম্পায়ার। তিনিও কিছুটা ধোঁয়াশায় ছিলেন সম্ভবত। ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস) নেয় ইংল্যান্ড।তাতে দেখা যায়, বলটা স্মিথের গ্লাভসে লেগেছে। যা দেখে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে ওভাল। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে থাকেন ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়রাও। কিন্তু বলটা হাতে ঠিকভাবে ধরে না রেখেই সম্ভবত বলটা মাটিতে ছুড়ে দেন স্টোকস বা বলটা তাঁর হাত থেকে বেরিয়ে যায়।
যিনি নিজেও বলটা ছেড়ে দিয়ে মাথা নীচু করে নেন। সেই পরিস্থিতিতে নট-আউট দেওয়া হয়।পুরো বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। একেবারেই অসন্তুষ্ট ছিলেন ইংরেজ ক্রিকেটাররা। যদিও আইসিসির তরফে জানানো হয়েছে, ক্রিকেটের আইন মেনেই নট-আউট দেওয়া হয়েছে। মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের ৩৩.১ ধারা অনুযায়ী, ‘কোনও ক্যাচ নেওয়ার প্রক্রিয়া তখন থেকে শুরু হবে, যখন থেকে বলটা ফিল্ডারের কাছে সংস্পর্শে আসবে এবং যখন বলের উপর ও নিজের নড়াচড়ার উপর ফিল্ডারের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ আসবে, তখন সেই ক্যাচ নেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হবে।’ কিন্তু স্টোকসের থেকে সেই শর্তপূরণ হয়নি বলে আউট দেওয়া হয়নি। দেখুন ভিডিও:
৭৬ তম ওভারের শেষ বলটা অফস্টাম্পের বাইরে পিচের ‘ক্ষতের’ উপরে পড়ে। তার জেরে স্পিন হয়ে যায়। মার্শের ব্যাটের ভিতরের দিকে কাণায় বলটা লাগে। তারপর প্যাডে লেগে মার্শের বুকের কাছে উঠে যায় এবং প্রথম স্লিপের দিকে চলে যায়। তবে প্রথম স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা জো রুট বলের ধারেকাছেও পৌঁছাতে পারতেন না। আর পৌঁছানোর দরকারও হয়নি। কারণ নিজের ঝাঁপিয়ে পড়ে নিজের ডানহাত বাড়িয়ে অবিশ্বাস্য ক্যাচ নেন বেয়ারস্টো।
যে ক্যাচটা আরও স্পেশাল কারণ প্রাথমিকভাবে বলের অভিমুখ অনুসরণ করায় বাঁ-দিকে সরে যাচ্ছিলেন ইংল্যান্ডের উইকেটকিপার। সেখান থেকে ঘুরে এসে ক্যাচটা ধরেন। যিনি বিশাল বড় চোট সারিয়ে আসার পর এবার অ্যাশেজে উইকেটকিপিংয়ের জন্য সমালোচিত হচ্ছিলেন।