‘দুর্বল হৃদয়ের ব্যক্তিদের জন্য নয়’ এই টেস্ট। ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ড-শ্রীলঙ্কার প্রথম টেস্টের পঞ্চম দিনের খেলা শুরু হওয়ার আগে সেই সতর্কবাণী দেওয়া যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তা ম্যাচের শেষলগ্নে বোঝা গেল। চূড়ান্ত (আরও কোনও বিশেষণ আছে নিশ্চয়ই! ম্যাচটা দেখে অবশ্য মাথায় আর কিছু আসছে না) উত্তেজনার টেস্টে শেষ বলে শ্রীলঙ্কাকে এক রানে হারিয়ে দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। সেইসঙ্গে ৭৫ বছর পর শেষ বল টেস্ট জয়ের নজির তৈরি হল। যে জয়ের ফলে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের টিকিট পেয়ে গিয়েছে ভারত।
টেস্টের সম্ভাব্য শেষ বলে ম্য়াচ জয় : ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৯৪৮ সালের ডিসেম্বরে ডারবানে শেষ বলে জিতেছিল ইংল্যান্ড। শেষ বলে ক্লিফ গ্ল্যাডউইন স্ট্রাইকে ছিলেন। লেগ-বাইয়ে রান হয়েছিল। দুই উইকেটে জিতে গিয়েছিলেন ইংরেজরা।নিউজিল্যান্ড বনাম শ্রীলঙ্কা: ২০২৩ সালের মার্চে ক্রাইস্টচার্চে শেষ বলে জিতেছে নিউজিল্যান্ড। শেষ বলে স্ট্রাইকে ছিলেন কেন উইলিয়ামসন। ব্যাটে বল ঠেকাতে পারেননি। দৌড়ে এক রান নেন। বাই হিসেবে এক রান দেওয়া হয়।
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জয়ের জন্য পঞ্চম দিনে নিউজিল্যান্ডের ২৫৭ রান দরকার ছিল। হাতে ছিল নয় উইকেট। কিন্তু বৃষ্টির জন্য নির্ধারিত সময় খেলা শুরু হয়নি। নির্ধারিত সময়ের পর যখন খেলা শুরু হয়, তখন কিউয়িদের জয়ের কাজটা যথেষ্ট কঠিন ছিল। কিন্তু চ্যালেঞ্জটা নেয় নিউজিল্যান্ড। ৯০ রানে তিন উইকেট পড়ে যাওয়ার পর কিউয়িদের টানতে থাকেন উইলিয়ামসন এবং ডারিল মিচেল (৮১ রান)। দু’জনে কিউয়িদের জয়ের স্বপ্ন দেখাতে থাকেন। সেইসময় কিউয়িদের সম্ভবত সবথেকে বেশি সমর্থন করছিলেন ভারতীয়রা। কারণ শ্রীলঙ্কা না জিতলেই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের টিকিট পেত টিম ইন্ডিয়া।
তবে শ্রীলঙ্কাও হাল ছাড়েনি। দুরন্ত বোলিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় উইকেট নিয়ে ম্যাচে জয়ের আশা জিইয়ে রাখে লঙ্কাবাহিনী। শেষ ওভার যখন শুরু হয়, তখনও চারটি ফলাফলই সম্ভব ছিল। কিউয়িদের হাতে ছিল তিন উইকেট। আট রান দরকার ছিল। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে শেষ বলে জিতে যায় নিউজিল্যান্ড। তাও সেটাও একেবারে রুদ্ধশ্বাস ছন্দে। ব্যাটে বল লাগাতে পারেননি উইলিয়ামসন (১২১ রানে অপরাজিত)। তবে রান নিতে দৌড়ান। বাই হিসেবে এক রান দেওয়া হয়।
সব মিলিয়ে নিউজিল্যান্ডের এই জয়লাভ যে ভারতীয় দলকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পৌঁছে দিল সেই নিয়ে আর কোন সন্দেহ নেই।