আরজিকর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উঠে এল বিস্ফোরক তথ্য। জানা গিয়েছে, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে ওই তরুণীকে এমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে রিপোর্টে। রাত ৩টে থেকে সকাল ৬টার মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। তরুণী চিকিৎসকের গলার একটি হাড় ভাঙা। তাই প্রাথমিক অনুমান, গলা টিপে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে ওই তরুণীকে। শরীরের মোট দশ জায়গায় ক্ষত পাওয়া গিয়েছে। যৌনাঙ্গেও রক্ত পাওয়া গিয়েছে বলে খবর সূত্রের।
অর্ধনগ্ন অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল ওই তরুণীর দেহ। চার তলার ওই সেমিনার হলের কাছে কোনও নিরাপত্তারক্ষীও ছিল না বলে জানা গিয়েছে। এদিন সকালে মৃতের পরিবারের তরফেও ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ তোলা হয়। ইতিমধ্যেই, ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের সিট গঠন করা হয়েছে। খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই তদন্ত চলছে। অন্য কোনও ধারা এখনও যুক্ত হয়নি। হোমিসাইড দপ্তরের অফিসাররা রয়েছেন। শুক্রবার সকালে ওই চিকিৎসকের মৃতদেহ হাসপাতালের এমার্জেন্সি বিভাগের চার তলার সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয়। চিকিৎসকের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে শেষ ফোনে কথা হয়েছিল তাঁদের মেয়ের সঙ্গে। চিকিৎসকের মায়ের দাবি, তাঁর মেয়েকে খুন করে ফেলা হয়েছে।
পরিবারের দাবি, তাঁদের মেয়ের শরীরে কোনও কাপড় ছিল না। শরীরে একাধিক দাগ ছিল। ঘটনায় আরজি করে পৌঁছেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব। তদন্তের দাবিতে কর্মবিরতি দেখিয়েছেন, তরুণী চিকিৎসকের সহপাঠীরাও। ইতিমধ্যেই, ওই চিকিৎসকের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, চিকিৎসকের মৃত্যুতে এদিন পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে ওঠে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে। ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের সিপি বিনীত গোয়েলও।
একদিকে যখন জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরাতে তৎপর রাজ্য সরকার, অন্যদিকে বাংলাজুড়ে যে গণ আন্দোলন শুরু হয়েছে তা বন্ধ করতেও সোমবার সুপ্রিম কোর্টে জোরালো সওয়াল করেন রাজ্য সরকারের আইনজীবী। রাজ্য সরকারের আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, ‘রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ চলছে। পুলিশের কাছে কোনও সূচি জমা দেওয়া হচ্ছে না। পুলিশকে রুট জানানো হচ্ছে না। পুলিশের অনুমতি নেওয়া হচ্ছে না। সর্বত্র প্রতিবাদ চলছে। আমরা কী করব? বাস্তবে এটা হচ্ছে। এখন গোটা ব্যাপারটা অন্যদিকে চলে গেছে। যেটা আমি বলতে চাই না।’ সরকারের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘাতের আবহে এখন মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে কী হয়, সেদিকেই নজর সকলের।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘কোনও মানুষ পরিষেবা না পেয়ে মারা গেলে লক্ষ্য রাখতে হবে। অনেকে এখানে কাজ করছে না, প্রাইভেট হাসপাতালে গিয়ে কাজ করছে। এতে কর্পোরেট বিজনেস বেড়েছে। আমি এখনও চাই না কারও বিরুদ্ধে কোনও অ্যাকশন নিতে’। এখনও চাই কথা বলে বিষয়টার মীমাংসা করতে, স্পষ্ট বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর।
মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টও ডাক্তারদের অনুরোধ করেছে জুনিয়রদের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য। আমিও এই মিটিং থেকে অনুরোধ করব, দয়া করে আপনারা কাজে যোগদান করুন। যে কেউ কথা বলতে চাইলে আসতেই পারে। জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে যদি সত্যি আপনাদের কিছু বলার থাকে, আসুন না, কথা বলুন। কোনও আপত্তি তো নেই। আমরা কাউকে বলিনি কথা বলব না।’