মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘কোনও মানুষ পরিষেবা না পেয়ে মারা গেলে লক্ষ্য রাখতে হবে। অনেকে এখানে কাজ করছে না, প্রাইভেট হাসপাতালে গিয়ে কাজ করছে। এতে কর্পোরেট বিজনেস বেড়েছে। আমি এখনও চাই না কারও বিরুদ্ধে কোনও অ্যাকশন নিতে’। এখনও চাই কথা বলে বিষয়টার মীমাংসা করতে, স্পষ্ট বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর।
মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টও ডাক্তারদের অনুরোধ করেছে জুনিয়রদের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য। আমিও এই মিটিং থেকে অনুরোধ করব, দয়া করে আপনারা কাজে যোগদান করুন। যে কেউ কথা বলতে চাইলে আসতেই পারে। জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে যদি সত্যি আপনাদের কিছু বলার থাকে, আসুন না, কথা বলুন। কোনও আপত্তি তো নেই। আমরা কাউকে বলিনি কথা বলব না।’
মঙ্গলবার বিকাল পাঁচটার মধ্যে চিকিৎসকরা কাজে যোগ দিন। কর্মবিরতি শেষ করতে এবার জুনিয়র ডাক্তারদের সময়সীমা বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। মঙ্গলবার বিকেলের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে কর্মবিরতি চলবে। পাল্টা রাজ্য সরকারকে ডেডলাইন বেঁধে দিলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা। যদিও এই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভও উগরে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)।
এবার জুনিয়র চিকিৎসকদের খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ক্যান্সার আক্রান্ত রোগিণীকে মৃত ঘোষণার পর, জুনিয়র চিকিৎসকরা দেহের ময়নাতদন্তের কথা বলায় বেঁকে বসে মৃতের পরিবার। অভিযোগ, ময়নাতদন্ত ছাড়াই ডেথ সার্টিফিকেট লিখে দেওয়ার দাবি জানায় তারা। রাজি না হওয়ায় জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।
প্রেসিডেন্সি জেলে সন্দীপ ঘোষের জন্য আঁটসাঁট নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা তালাবন্ধ সেলে রাখা হচ্ছে আর জি কর মেডিক্যালের প্রাক্তন অধ্যক্ষকে। প্রেসিডেন্সি জেলের প্রভাবশালীদের ওয়ার্ড পয়লা বাইশে নয়, সন্দীপ ঘোষের জায়গা হয়েছে দশ সেলের ৪৬ নম্বর লক আপে। প্রেসিডেন্সি জেলে সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেনের প্রতিবেশী আর জি কর মেডিক্যালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ।
একদিকে যখন জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরাতে তৎপর রাজ্য সরকার, অন্যদিকে বাংলাজুড়ে যে গণ আন্দোলন শুরু হয়েছে তা বন্ধ করতেও সোমবার সুপ্রিম কোর্টে জোরালো সওয়াল করেন রাজ্য সরকারের আইনজীবী। রাজ্য সরকারের আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, ‘রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ চলছে। পুলিশের কাছে কোনও সূচি জমা দেওয়া হচ্ছে না। পুলিশকে রুট জানানো হচ্ছে না। পুলিশের অনুমতি নেওয়া হচ্ছে না। সর্বত্র প্রতিবাদ চলছে। আমরা কী করব? বাস্তবে এটা হচ্ছে। এখন গোটা ব্যাপারটা অন্যদিকে চলে গেছে। যেটা আমি বলতে চাই না।’ সরকারের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘাতের আবহে এখন মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে কী হয়, সেদিকেই নজর সকলের।