ভারতীয়রা তাকে চেনে না,তবু মৃত্যুর ১০০ বছর পরেও এই ভারতীয়র নামে স্কটল্যান্ডে রাস্তা,হাসপাতাল !

তার নাম জয়ন্তী দাস, খুব সাধারন পরিবারের একটি ছেলে। ভারতের কোন মানুষই হয়তো তাকে চেনে না, কিন্তু স্কটল্যান্ডে তিনি একটি খুবই পরিচিত নাম? তার নাম অনুসারে সেখানে রয়েছে রাস্তা, তার নাম অনুসারে রয়েছে লাইব্রেরী। তার নামে রয়েছে স্কলার্শিপ যে স্কলার্শিপ পেয়ে অনেক ভারতীয়রা এখন বিদেশে পড়তে যায়। তাহলে কি তিনি সেখানকার কোন ব্যবসায়ী ? ভারত থেকে সেখানে গিয়ে ধনী হয়ে গেছেন ? মোটেই না.. তিনি কোনো ব্যবসায়ী শিল্পপতি নন, তিনি একজন ডাক্তার, ১৮৯৮ সালে ব্রিটিশরাজ চলাকালীন তার জন্ম হয় পাঞ্জাবে, কিন্তু পাঞ্জাব থেকে শুধু স্কটল্যান্ডে তিনি বিখ্যাত হলেন কি করে ?

বিখ্যাত জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড যেখানে হয়েছিল তার থেকে মাত্র 30 কিলোমিটার দূরে তিনি থাকতেন এবং ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি ছিল তার ঝোঁক, আশেপাশে তখন শুধুই ভারতীয়দের সাথে ব্রিটিশদের লড়াই খুনোখুনি কিন্তু তার স্বপ্ন ছিল অন্য কিছু। তিনি চেয়েছিলেন মানুষের সেবা করতে, তার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়া তাই কলেজে পড়াকালীন এক প্রফেসর তার ট্যালেন্ট বুঝতে পারেন এবং বিশেষ স্কলার্শিপ দিয়ে তাকে পড়াশোনা করতে পাঠান বিদেশে, এর পরে কি হবে সেটা হয়তো তিনি কল্পনাও করতে পারেন নি। সেখানে তিনি ভর্তি হন University College Dundee তে, ১৯২৩ সালে তিনি গ্র্যাজুয়েশন সম্পূর্ন করেন।

```

তিনি ডাক্তার হন এবং একটি ছোট ক্লিনিক খোলেন। তারপর তিনি সেখানে একজনকে বিয়ে করেন এবং তারপরেই বদলে যায় সবকিছু, তার স্ত্রীর ফ্যামিলি একটি রাজনৈতিক পরিবার ছিল এবং তার সূত্র ধরেই রাজনীতিতে নামেন তিনি। কাউন্সিলর হিসেবে তিনি নির্বাচিত হন। আর তার পরেই তার সমাজ কল্যাণে ছেয়ে যায় পুরো এলাকা। ধনী-গরীব নির্বিশেষে প্রত্যেককে বিনামূল্যে শিক্ষা, চিকিৎসা, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, বাচ্চাদের জন্য নতুন স্কুল তৈরি করা একটা সরকারের যা করা উচিত একজন কাউন্সিলর হয়ে তিনি সেই দায়িত্ব পালন করেন। তিনি শ্লোগান তোলেন ‘Equality, not privilege; needs, not status’ গরীব মানুষের জন্য তার মন সর্বদা কাঁদত তাই তিনি গরিবদের জন্য প্রচুর জনকল্যাণমূলক কাজ করেন। ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণে পাট ইংরেজরা বিদেশে সাপ্লাই করতো যার জন্য সেখানকার পাট ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়ত, তাই তিনি এবং তার স্ত্রী এর বিরুদ্ধেও সোচ্চার হয়েছিলেন। শুধু তাই নয় তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্যও সোচ্চার হয়েছিলেন।

1954 সালে মাত্র 56 বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়। যে কলেজে তিনি পড়াশোনা করেছিলেন সেই কলেজ এখনো পর্যন্ত তাকে সম্মান প্রদর্শন করে।

```