রেকর্ড নবম বার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ খেতাব জিতল ভারত। সব মিলিয়ে ১৩ বার ফাইনাল খেলেছে। টুর্নামেন্টে অন্যতম সেরা পারফরম্যান্স ভারতীয় দলের গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিং সান্ধুর। বিশেষ করে বলতে হয় সেমিফাইনাল এবং ফাইনালের কথা। যদিও টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষক নন গুরপ্রীত!সেমিফাইনালে শক্তিশালী লেবাননের বিরুদ্ধে নেমেছিল ভারত। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচের ফল না হওয়ায় অতিরিক্ত সময় গড়ায় ম্যাচ। সেখানেও অবশ্য ফল হয়নি। অবশেষে টাইব্রেকার। লাগাতার নবমবার টুর্নামেন্ট জিতে ইতিহাস গড়লো ভারত, পাশাপাশি অনবদ্য পারফরম্যান্স দেখা গেল ক্যাপ্টেন সুনীল ছেত্রীর থেকে।
গুরপ্রীতের অনবদ্য পারফরম্যান্স। ভারত ৪-২ ব্যবধানে জিতে ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল। ফাইনালে কুয়েতের বিরুদ্ধে ব্য়াকফুটে ছিল ভারত। ম্যাচের ১৪ মিনিটেই এগিয়ে যায় কুয়েত। ৩৯ মিনিটে সমতা ফেরান লালিনজুয়ালা ছাংতে। নির্ধারিত সময়ে এবং অতিরিক্ত সময়ে দুর্দান্ত দুটি সেভ করেন গুরপ্রীত। টাইব্রেকারে প্রথম শটই আটকে দেন। ভারত অ্যাডভান্টেজ ছিল সে কারণেই।উদান্ত সিং মিস করায় ম্যাচে ফের টুইস্ট। সাডেন ডেথে কুয়েত অধিনায়কের শট আটকে ভারতের জয় নিশ্চিত করেন গুরপ্রীত। আর পুরো টুর্নামেন্টে তিনি সেই কাজই করে যাচ্ছেন, যার কারণে নিজের টুর্নামেন্ট সেরা হয়ে গোল্ডেন বুট জিতলেও দলের গোলকিপার কে সব কৃতিত্ব দিলেন সুনীল ছেত্রী।
যদিও টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষক নির্বাচিত হন বাংলাদেশের আনিসুর রহমান জিকো। সে কারণেই প্রশ্ন উঠছে। ভারত অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী অবশ্য ব্যক্তিগত দুটি পুরস্কারও জিতলেন। এ বারের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সবচেয়ে বেশি গোল সুনীলের। গোল্ডেন বুট জিতলেন তিনি। টুর্নামেন্ট সেরাও হলেন সুনীল। বিজয়ী দল হিসেবে ভারতের আর্থিক পুরস্কার ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। ফাইনাল ম্যাচে এমনিতেই স্নায়ুর চাপ থেকে। এদিন যেন দু দলই স্নায়ুর চাপে বেশি ভুগেছে। ফাউলের পর ফাউল। এবং হলুদ কার্ডের পর হলুদ কার্ড। হলুদ কার্ড দেখতে হল কুয়েতের কোচ রুই ভেন্টোকেও যিনি পর্তুগাল জাতীয় দলে লুই ফিগোর সঙ্গে খেলেছেন। তো এত ফাউলের জন্যই হোক বা দু দলের টাইট ডিফেন্সের জন্যই হোক ম্যাচটা দেখার পক্ষে একেবারেই ভাল ছিল না। সারাক্ষণই বল এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে গেল বটে। কিন্তু ডিফেন্সের পাঁচিলে ধাক্কা খেয়ে ফিরে এল।
তবু ওরই মধ্যে প্রথমার্দ্ধেই হয়ে গেল দুটো গোল। ১৪ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে মাইনাস পেলেন কুয়েতের শাহবদ আল খালদি। সামনে শুধু গোল। গুরপ্রীতের কিছু করার ছিল না। ভারতের এই দলটা খুব একটা গোল খায় না। তবে গোল খেলেও কিন্তু খেই হারিয়ে ফেলে না। যেন কিছুই হয়নি এই মানসিকতায় ছাংতে, অনিরুদ্ধ থাপা, জিকসন সিংরা মাঝ মাঠটা ধরে খেলতে থাকেন। সুনীল এদিন একেবারেই তাঁর সেরা ফর্মের ধারে কাছে ছিলেন না। তবে অন্য দিনের চেয়ে সাহাল আব্দুল সামাদ এবং এবং আশিক কুরুনিয়ন একটু নড়াচড়া বেশি করেছেন। ৩৯ মিনিটে গোলটা শোধ করে ভারত। ডান দিক থেকে ভেসে আসা বল আশিক দেন সুনীলকে। তাঁর ফরোয়ার্দ পাস ধরে সামাদ চমৎকার মাইনাস করেন। বল যায় একেবারে ফাঁকায় দাঁড়ানো ছাংতের কাছে। গোল করতে ভুল হয়নি তাঁর।
সব মিলিয়ে একটা চমৎকার সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভারত। এখন বিশ্রাম। সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ডে কিংস কাপ। ভারতের সামনে বিদেশের মাটিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ। দেখা যাক, ভারত সেই পরীক্ষায় উতরোতে পারে কি না। তবে আপাতত শুধু আনন্দ এবং উৎসব।