অপেক্ষার প্রহর শেষ হতেই উচ্ছ্বাস। গত কয়েকদিন ধরেই অপেক্ষা চলছিল ফুটবলে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের উদ্বোধনী দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হল ভারত-পাকিস্তান। এই ম্যাচ নিয়ে যেমন অপেক্ষা ছিল, তেমনই আশঙ্কাও। পাকিস্তান স্পোর্টস বোর্ডের গাফিলতিতে অনুমতি মেতে অনেক দেরি হয় পাকিস্তান ফুটবল সংস্থার। মরিশাসে চারদেশীয় টুর্নামেন্টে খেলছিল পাকিস্তান। সেখান থেকে গত রবিবারই ভারতে আসার কথা ছিল। কিন্তু অনুমতিতে দেরি হওয়ায় ভিসা সমস্যায় পড়ে পাকিস্তান ফুটবল টিম। সাফের তরফে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সূচি বদল সম্ভব নয়।
এ দিনই বেঙ্গালুরুতে পৌঁছয় পাকিস্তান ফুটবল টিম। মরিশাসে তিন ম্যাচেই হার। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপেও তাদের বিরুদ্ধে বড় জয়ে যাত্রা শুরু করল ভারত। অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী হ্যাটট্রিক করেন। সদ্য ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ জিতেছে ভারত। টুর্নামেন্টে কোনও গোল খায়নি। ফাইনালে লেবাননের মতো শক্তিশালী দলকে হারানো। সব মিলিয়ে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে ছিল ভারতীয় দল। লেবাননের বিরুদ্ধে ফাইনাল থেকে একাদশে বেশ কিছু পরিবর্তন করেছিলেন। রক্ষণে অভিজ্ঞ প্রীতম কোটাল, সুভাশিস বসু খেলেন শুরু থেকেই। গোলে অমরিন্দর সিং। যদিও খুব বেশি কসরৎ করতে হয়নি তাঁদের। পাকিস্তান সেই অর্থে কোনও গোলের সুযোগই তৈরি করতে পারেনি।
বরং পাকিস্তানের ভুলেই এগিয়ে যায় ভারত।ম্যাচের বয়স তখন সবে ১০ মিনিট। পাকিস্তান গোলকিপার সাকিব হানিফ সতীর্থকে পাস দিতে গিয়ে ফসকান। সুনীল ছেত্রী কাছেই ছিলেন। সুযোগ নিতে ভুল করেননি। পাকিস্তান গোলকিপারের শিক্ষানবীশের মতো ভুল, সুনীলের গোলে ম্যাচের ১০ মিনিটেই এগিয়ে যায় ভারত। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে পেনাল্টি পায় ভারত। বক্সের মধ্যে অনিরুদ্ধ থাপার শট ইচ্ছাকৃত হ্যান্ডবল পাকিস্তান মিডফিল্ডার মহম্মদ মুসাক খানের। পেনাল্টি থেকে ২-০ করেন সুনীল ছেত্রী। বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে দর্শক উপস্থিতি ২২৮৬০। হাউসফুল গ্যালারির গর্জন ক্রমশ বাড়তে থাকে।
দ্বিতীয়ার্ধে খুব তাড়াতাড়িই স্কোর লাইন বাড়তে পারতো। সাহাল আব্দুল সামাদের দুর্দান্ত ফ্রি-কিক। জিকসনের হেডার ক্রসবারে লাগে। কোনও রকমে বল বাইরে পাঠান পাক গোলকিপার। তবে ব্যবধানে বাড়াতে সমস্যা হয়নি ভারতের। ম্যাচের ৭২ মিনিটে অনবদ্য গতিতে গোলের দিকে এগোচ্ছিলেন ক্যাপ্টেন সুনীল ছেত্রী। বক্সের মধ্যে তাঁকে ধাক্কা মারেন মহম্মদ সুফিয়া। পেনাল্টি দিতে ভুল করেননি নেপালের রেফারি প্রজ্জ্বল ছেত্রী। পেনাল্টি থেকে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন ভারত অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী।
এখানেই শেষ নয়। স্কোরশিটে নাম লেখান উদান্ত সিং। ম্যাচের ৮০ মিনিটে ডিফেন্স থেকে আনোয়ার আলির লম্বা পাস। পাকিস্তান বক্সের বাইরে বল রিসিভ করেন উদান্ত। পাকিস্তান রক্ষণ ভাগ তাঁকে অফসাইডের ফাঁদে ফেলতে চেয়েছিল। যদিও সেই ফাঁদ কাটিয়ে অনবদ্য গোল উদান্তর। হাউসফুল কান্তিরাভায় ৪-০’র বড় জয়ে মাঠ ছাড়ে ভারত।