ওয়েব সিরিজ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে অভিনব কায়দায় জালিয়াতি!নতুন পদ্ধতিতে হতবাক পুলিশ

ওয়েব সিরিজ দেখে অনুপ্রাণিত। তারপর সরাসরি অপরাধে হাতেখড়ি। একের পর এক সাফল্য। পাঁচজন যুবকের একটি গ্যাং বছরখানেক ধরে এই কারবার চালিয়ে মোটা টাকা হাতিয়ে বেশ আয়েশি জীবনযাপনও শুরু করেছিল। যদিও শেষরক্ষা হল না। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল ৫ জন। পুলিশি জেরায় নিজেদের কীর্তি স্বীকার করেছে বলেই দাবি তদন্তকারীদের। সল্টলেকের (Saltlake) বাসিন্দা পি কে ব্রম্ভ (৮০) নামে এক ব্যক্তি সম্প্রতি প্রতারকদের ফাঁদে পড়েন। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে থানায় যেতে পারেননি।

তাঁর হয়ে অন্য এক ব্যক্তি অভিযোগ জানিয়েছিলেন গতবছর ডিসেম্বর মাসের ২৫ তারিখ। অভিযোগ ছিল, ৪৬ হাজার ৬৮৬ টাকা পি কে ব্রম্ভের থেকে নিয়েছিল প্রতারকরা। জানা যায়, ডিসেম্বর মাসে অ্যামাজন প্রোমো টিম এক্সজিকিউটিভ পরিচয় দিয়ে একটি ফোন যায় ওই বৃদ্ধের কাছে নিজেকে অ্যামাজনের ডেসপ্যাচ ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি কথা বলেন। বৃদ্ধকে অপেক্ষাকৃত অল্প দামে জিনিস কেনার প্রস্তাব দেয় ফোনের ওপারে প্রান্তে থাকা ব্যক্তি। এভাবে একটানা বেশ কয়েকবার তাঁকে ফোন করা হয়। নানাবিদ অফারের কথা জানানো হয়। শেষমেশ চল্লিশ হাজার টাকার উপর তাঁদের অ্যাকাউন্টে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন ব্রম্ভবাবু।

টাকা পাওয়ার পর সাধারণত যা হয়, কোনও কিছুই আসেনি এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় অ্যামাজনের কর্মী পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি। এরপর প্রতারণার ঘটনা আন্দাজ করে পুলিশের দ্বারস্থ হন বৃদ্ধ। তদন্ত শুরু হয়। শেষমেশ রিজেন্ট কলোনি এবং রিজেন্ট পার্ক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় পাঁচজনকে। ধৃতরা মনীশ কুমার (২৫), কার্তিক কুমার (২৫), প্রিয়াংশু শর্মা (২১) এবং রাকেশ কুমার (২০)। এরা রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকায় ঘাঁটি গেড়েছিল।

এই চারজন ছাড়াও ধরা পরেছে গ্যাংয়ের আর এক সদস্য দীপক কুমার। সে জামশেদপুরের বাসিন্দা। টালিগঞ্জের অরবিন্দ নগরে থাকতে শুরু করেছিল সে। এদের কাছ থেকে ১০টি এটিএম কার্ড মিলেছে। চারটি মোবাইল এবং অতিরিক্ত সিম কার্ড পাওয়া গিয়েছে ৬টি।

এর সঙ্গে রাউটার, চেক বুক, আধার কার্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই গ্যাংটি পশ্চিমবঙ্গ শুধু নয়, বিহার এবং ঝাড়খণ্ডেও প্রতারণা করেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।