শূন্য থেকে শুরু করে আকাশে উড়ান,রতন টাটার জীবন কাহিনী হার মানাবে সিনেমার গল্পকেও

ভারতের অন্যতম সফল ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন হলেন টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান রতন টাটা(Ratan Tata)। তিনি একজন সফল ব্যবসায়ীর সাথে সাথে অত্যন্ত ভালো মনের একজন মানুষ। বছর 83 এর এই মানুষটি সব সময় দেশের আপদে-বিপদে থেকেছে। এই বয়সেও একই কর্ম দক্ষতার সাথে এখনো কাজ করে চলেছেন। কিন্তু আপনি জানলে অবাক হবেন জীবনে এত সফলতা অর্জন করা ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও তিনি অবিবাহিত। অথচ তিনি যৌবন বয়সে অত্যন্ত সুদর্শন পুরুষ ছিলেন। তাহলে প্রশ্ন আসতেই পারে কেন তিনি বিবাহ করেননি? এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন স্বয়ং রতন টাটা নিজেই।

রতন টাটা কে চেনেন না এমন ভারতীয় খুব কমই আছে। 1991 সালে JRD Tata এর পর টাটা গ্রুপের পঞ্চম চেয়ারম্যান হন রতন টাটা। ব্যবসাতে ইনি সাফল্যের চরম শিখরে উঠে ছিলেন। এজন্য ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য এনাকে CNN-IBN Indian of the Year এর মত খেতাব প্রদান করা হয়। এছাড়া এনি পদ্মভূষণ ও পদ্মবিভূষণ সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন। কিন্তু জানলে আপনি অবাক হবেন রতন টাটা জীবনে একটা সময়ে প্রেমে পড়েছিলেন এবং সেই প্রেমে ব্যর্থ হয়েছেন। তার প্রেমিকার সাথে বিবাহ পর্যন্ত কথা হয়ে গিয়েছিল কিন্তু শেষমেশ বিবাহে তিনি সফল হননি। এই কাহিনীটি রতন টাটা নিজে একটি ফেসবুক পেজে সাক্ষাৎকারের সময় বলেছেন।

Ratan Tata হলেন একজন ভারতীয় শিল্পপতি, সমাজসেবী, এবং টাটা সন্স এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান। 1937 সালে 28 ডিসেম্বর গুজরাটের সুরাট এ জন্মগ্রহণ করেন। আর কয়েকটি শিশুর মতোই ছোট বয়সে রতন টাটার ঠিক সেরকমই ছিলেন। তবে যখন তার বয়স 10 বছর হয় তখন তার পিতামাতার মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়। তারপর থেকে নতুন টোটোর সমস্ত দায়িত্ব নিয়েছিলেন তাঁর ঠাকুমা।ঠাকুমার দেওয়া নীতিবোধ আজও রতন টাটা মেনে চলেন। ঠাকুমা চেয়েছিলেন যেন রতন টাটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলেজে আর্কিটেকচার নিয়ে পড়াশোনা করে।কিন্তু তার বাবা চেয়েছিলেন ছেলে যেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোন কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং করে। তবে শেষ পর্যন্ত ঠাকুমার কথাতে রতন টাটা আর্কিটেকচার নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন এবং স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। স্নাতক হওয়ার পর তিনি দু’বছরের জন্য লস এঞ্জেলেসে কাজ করেন। যখন রতন টাটা লস এঞ্জেলেসে কাজ করছিলেন ঠিক তখনই তিনি এক মার্কিন যুবতীর প্রেমে পড়ে যান। রতন টাটার বক্তব্য অনুযায়ী, এই সময়টি তার জীবনের সবচেয়ে সুন্দরতম সময় ছিল।

দুজনের মধ্যে প্রেম ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে এবং বিবাহের জন্য তারা একমত হন। তবে ঠিক তখনই রতন টাটার ঠাকুমা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এজন্য তাকে দেশে ফিরে আসতে হয়। তবে এতে তাদের প্রেমে কোন প্রভাব পড়েনি।তাদের মধ্যে কথা হয় যে রতন টাটা দেশে আসার পরেই তার প্রেমিকাও দেশে আসবে এবং বিয়ে করে সংসার করবে। এই প্রস্তাবে যুবতীর পরিবার মেনে নেয়। কিন্তু বিধাতা মোড় ঘুরিয়ে দেয়। 1962 সালে ভারতের সাথে চীনের (Indo-china war) যুদ্ধ বাঁধে। আর এই কারণে তার প্রেমিকার পরিবার তাদের মেয়েকে ভারতে আসতে বাধা দেয়। আর এই ভাবেই রতন টাটার জীবনে প্রেমের পরিসমাপ্তি ঘটে। এই ঘটনার পর রতন টাটা আর বিবাহ করেননি, রয়ে গেলেন চিরকুমার।