পাশে ফোন রাখলেই গায়েব ইন্টারনেট,দেশজুড়ে চর্চায় উত্তরপ্রদেশের 14 বছরের ছাত্র!

কারও হাতে মোবাইল ফোন দেওয়ার আগে বড্ড ভয় হয় আমাদের! পাছে, সব মোবাইল ডেটা না উড়ে যায়! এবার এমনই এক আশ্চর্যজনক কাণ্ড ঘটল নবম শ্রেণীর এক ছাত্রের সঙ্গে। তার হাতে যাঁরই ফোন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, নিমেষে গায়েব হয়ে যাচ্ছে সমস্ত মোবাইল ডেটা। 14 বছরের সেই ছাত্রের নাম অস্তিত্ব আগরওয়াল। বাড়ি উত্তরপ্রদেশের আলিগড় জেলার জট্টারি গ্রামে। গোটা উত্তরপ্রদেশে হইহই রব পড়ে গিয়েছে অস্তিত্বের এমনতর কাণ্ডে। তাঁর বাবা গৌরব আগরওয়ালের কথায়, ‘মে মাসের প্রথম থেকেই মোবাইল ডেটা অন করতে না করতেই বাড়ির সমস্ত ফোনের মোবাইল ডেটা শেষ।’

এমন অবাক কাণ্ড দেখে সাত তাড়াতাড়ি সার্ভিস সেন্টারে চলে যান অস্তিত্বের পিতা গৌরব আগরওয়াল। কিন্তু, সার্ভিস সেন্টারের পক্ষ থেকে পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, ফোনের কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু, কেন এই ভাবে সমস্ত মোবাইল ডেটা ফুরিয়ে যাচ্ছে, তার কারণও দর্শাতে একপ্রকার ব্যর্থই হয় সেই সার্ভিস সেন্টার। গৌরব আগরওয়ালের কথায়, ‘শুধু আমাদের ফোনই নয়। অস্তিত্বের হাতে যে ফোনই দেওয়া হচ্ছে, তার মোবাইল ডেটা শেষ হয়ে যাচ্ছে।’ এই নয় যে, অস্তিত্ব নিজে ইন্টারনেট সার্ফিং করে বা ভিডিয়ো দেখে মোবাইল ইন্টারনেট শেষ করে দিচ্ছে বলেও জানালেন গৌরব আগরওয়াল। স্বাভাবিক ভাবেই, এমনতর কাণ্ডে হতবাক পরিবার কিঞ্চিত চিন্তিতও।

```

গৌরব বাবু বলছিলেন যে, পুত্রের দেখভাল করেন তাঁরই স্ত্রী। আর মোবাইল ডেটা গায়েব হওয়ার বিষয়টি তিনিই প্রথম খেয়াল করেন। কিন্তু, প্রথমে বিষয়টি এত নজর দেননি তাঁরা। ভেবেছিলেন, পেটের সন্তানই তো! পড়াশোনার কাজে, করোনায় গৃহবন্দি ছোট্ট ছেলের মনোরঞ্জনে যদি সব ইন্টারনেট শেষ হয়ে যায়, তাহলে কীই বা আসে যায়! আবার রিচার্জ করিয়ে নিলেই তো হল! আর সেখানেই খটকা লাগে আগরওয়াল পরিবারের! আবার রিচার্জ করতে গিয়েও দেখা যায়, সেই একই কাণ্ড। আর তারপরে যখন গোটা পাড়ার সকলের ফোন অস্তিত্বের হাতে আসার সঙ্গে সঙ্গেই মোবাইল ইন্টারনেট শেষ হয়ে যায়, তখনই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন তাঁরা। গৌরবের কথায়, ‘পরে আমরা বুঝতে পারি যে, অস্তিত্বের শরীরের সঙ্গে কোনও ভাবে যোগাযোগ তৈরি হওয়ার কারণেই নিমেষে ফুরিয়ে যাচ্ছে সবার সমস্ত মোবাইল ইন্টারনেট।’

সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত অস্তিত্বের পিতা গৌরবস্বাভাবিক ভাবেই ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে অত্যন্ত চিন্তিত উত্তরপ্রদেশের আগরওয়াল পরিবার। গৌরব আগরওয়ালের কথায়, ‘আমরা এখন বাড়িতে কোনও মোবাইলই রাখছি না। মোবাইল রাখতে রীতিমতো ভয় লাগছে! এক দিকে ছেলের শরীর আর এক দিকে মোবাইল ইন্টারনেট শেষ হয়ে যাওয়ার ভয়।’ পাশাপাশিই, তিনি আরও যোগ করে বললেন, ‘এই ধরনের অজানা রোগ আমার ছেলের ভবিষ্যৎের উপরেও একটা প্রশ্ন চিহ্ন তুলে দিয়েছে। বাড়ি থেকে ছেলেটা বেরোতে পারছে না। সাধারণ মানুষও অস্তিত্বের পাশে বসতে ভয় পাচ্ছে।’

```

অস্তিত্বের রোগের কূলকিনারা করতে পারেননি ডাক্তাররাওএদিকে আবার অস্তিত্বের দাবি, শরীরে কোনও অসুবিধা অনুভব করতে পারছে না সে। কিন্তু, তাঁর সংস্পর্শে কোনও ফোন এলে, মোবাইল ইন্টারনেট শেষ হয়ে যাওয়াটাও যথেষ্ট চিন্তায় ফেলেছে তাকে। করোনা অতিমারির জন্য ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারেনি সে। কারণ, প্রতিটা ক্লাসই অনলাইনে হচ্ছে এবং তাঁর বাড়িতে বাবা ও মায়ের ফোন রিসেট করার জন্যও অনলাইন ক্লাসে বসতে পারেনি অস্তিত্ব। তার বাবা ও মা আরও উদ্বেগের সঙ্গে বললেন, ‘বেশ কয়েকজন নিউরোসার্জেনকে আমরা ইতিমধ্যেই দেখিয়েছি, কিন্তু অস্তিত্বের এই রোগ ধরতে পারছেন না কোনও ডাক্তারই।’