বড় খবর:হার থেকে শিক্ষা!পরের বছর ৫ জন ফ্লপ ক্রিকেটারকে ছেড়ে দিতে চলেছে কেকেআর!

লখনউ সুপার জায়ান্টসের কাছে হেরে শনিবার শেষ হয়ে গিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্সের আইপিএল অভিযান। শ্রেয়স আয়ারের অনুপস্থিতিতে কেকেআর কর্তৃপক্ষ এ বছর অধিনায়ক করেছিলেন নীতীশ রানাকে। দিল্লির অলরাউন্ডারের নেতৃত্বে লিগ পর্বের ১৪টি ম্যাচের ছ’টিতে জয় পেয়েছে কেকেআর।এ বার প্রতিযোগিতার শুরু থেকে একাধিক সমস্যায় ভুগেছে কেকেআর। প্রথম একাদশ এবং ওপেনিং জুটি বেছে নিতে পারেননি নাইটরা। ধারাবাহিকতার অভাবও ভুগিয়েছে তাঁদের। একাধিক ক্রিকেটারের ছন্দে না থাকা এবং ধারাবাহিকতার অভাব প্রভাব ফেলেছে দলের পারফরম্যান্সে।

আগামী বছর ভাল ফল করতে চাইলে কেকেআর কর্তৃপক্ষকে দলে কিছু পরিবর্তন করতে হবে বলেই মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। সবার প্রথম যার নাম আসে, তিনি সুনীল নারাইন: ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলরাউন্ডার অতীতে কেকেআরকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ জিতিয়েছেন। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নারাইনের বলের ধার কমেছে। এ বারের আইপিএলে নারাইন ১৪টি ম্যাচ খেলে উইকেট পেয়েছেন ১১টি। ওভারপ্রতি খরচ করেছেন ৭.৯৭ রান। তাঁর বল খেলতে ব্যাটাররা তেমন সমস্যায় পড়েননি। প্রতিটি উইকেট নিতে নারাইন খরচ করেছেন ৩৪.৮১ রান। প্রতি ২৬.১৮ বলে একটি উইকেট পেয়েছেন। অর্থাৎ, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের নির্ধারিত প্রতি ৪ ওভার বা ২৪ বলে তিনি কোনও উইকেট নিতে পারেননি।ব্যাট হাতেও আগের মতো পারফরম্যান্স করতে পারছেন না ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলরাউন্ডার। এ বারের আইপিএলে করেছেন মাত্র ২১ রান। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭। গড় ৩। স্ট্রাইক রেট ৮৪।

ফিল্ডার নারাইনও সহজ ক্যাচ ফেলেছেন। শেষ দু’টি ম্যাচ ছাড়া দলকে কোনও ভরসাই দিতে পারেননি কেকেআরের সব থেকে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। কেকেআর তাঁর উপর গোটা প্রতিযোগিতায় আস্থা রাখলেও ৩৪ বছরের ক্রিকেটার শুধু হতাশই করেছেন। আগামী বছর তাঁকে ছেড়ে দিতে পারে কলকাতা নাইট রাইডার্স। আন্দ্রে রাসেল: ওয়েস্ট ইন্ডিজের আর এক অলরাউন্ডার রাসেলও এখন অতীতের ছায়া। ১৪টি ম্যাচ খেললেও বলার মতো তেমন পারফরম্যান্স নেই তাঁরও। ব্যাট হাতে ২০.৬৪ গড়ে করেছেন ২২৭ রান। সর্বোচ্চ ৪২। স্ট্রাইক রেট ১৪৫.৫১। কয়েকটি বড় শট নিলেও ব্যাট হাতে দলের ভরসা হয়ে উঠতে পারেননি ৩৫ বছরের ক্যারিবিয়ান। বয়সের ছাপ পড়েছে রাসেলের ক্রিকেটেও। বল হাতেও সাফল্য নেই। তাই নীতীশও বোলার রাসেলকে খুব বেশি ব্যবহার করার ঝুঁকি নেননি। ১৪টি ম্যাচে পেয়েছেন ৭টি উইকেট। ওভারপ্রতি রান খরচ করেছেন ১১.৩৪। ১টি উইকেট নিতে খরচ করেছেন ১৩ রান। প্রতি ২৪.৫৭টি বলে ১টি উইকেট পেয়েছেন। অর্থাৎ, তিনিও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের নির্দিষ্ট ৪ ওভার বা ২৪ বলে উইকেট নিতে পারেননি। গোটা প্রতিযোগিতায় তিনি বল করেছেন মাত্র ১৫.১ ওভার। কেকেআরের আগামী বছরের দল থেকে যেতে পারেন এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারও।

টিম সাউদি: নিউ জ়িল্যান্ডের অভিজ্ঞ জোরে বোলারও নজর কাড়তে ব্যর্থ। তিনি দু’টি ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু তেমন কিছু করতে পারেননি। ৬ ওভার বল করে নিয়েছেন ২টি উইকেট। ওভারপ্রতি খরচ করেছেন ১৩.১৬ রান। প্রতি ১৮ বলে ১টি উইকেট নিলেও প্রতিটি উইকেটের জন্য সাউদি খরচ করেছেন ৩৯.৫০ রান। ৩৪ বছরের কিউয়ি ক্রিকেটার এখন নিউ জ়িল্যান্ডের জাতীয় দলেও নিয়মিত নন। যে ভরসা নিয়ে তাঁকে নিলামে কিনেছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্স কর্তৃপক্ষ, তার মর্যাদা দিতে ব্যর্থ সাউদি। আগামী বছর তাঁকেও বাদ দিতে পারে কলকাতা।

লকি ফার্গুসন: নিউ জ়িল্যান্ডের এই জোরে বোলারও নিজের দক্ষতার প্রতি সুবিচার করতে পারেননি আইপিএলে। কেকেআরের হয়ে ৩টি ম্যাচ খেলে পেয়েছেন মাত্র ১টি উইকেট। ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ১২.৫২। ১টি উইকেট নেওয়ার জন্য ফার্গুসন খরচ করেছেন ৯৬ রান। প্রতি ৪৬টি বলে একটি উইকেট নিয়েছেন। সাউদির মতো ফার্গুসনও কেকেআরকে একটুও ভরসা দিতে পারেননি। এই পরিসংখ্যানের পরেও কেকেআর ৩১ বছরের কিউয়ি জোরে বোলারকে আগামী বছরের দলে রাখলে বিস্মিত হতে হবে।