আইপিএলের ইতিহাসে নজির গড়েছেন। ১৬ বছরের আইপিএলের ইতিহাসে কখনও এত রান তাড়া করে জেতেনি কোনও দল। রবিবার গুজরাট টাইটানসের বিরুদ্ধে কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) ঠিক সেই কাজটাই করল। তবে কেকেআর ইতিহাস তৈরি করেছে বললে পুরোপুরি ভুল বলা হবে। কারণ সেই কাজটা করেছেন একা রিঙ্কু সিং – স্রেফ রিঙ্কু সিং (বোল্ড অ্যান্ড ক্যাপিটালে রিঙ্কু সিং)। শেষ পাঁচ বলে পাঁচটি ছক্কা মেরে কেকেআরকে অবিশ্বাস্যভাবে জিতিয়ে দিয়েছেন বাঁ-হাতি ব্যাটার।
যে ইনিংসের রিঙ্কু জানালেন, নিজের উপর যে আস্থা আছে, সেটার উপর ভর করেই সেই অবিশ্বাস্য কাজটা করেছেন। সঙ্গে ক্রিজের অপরপ্রাপ্ত থেকে ভরসা জুগিয়েছেন উমেশ যাদব।রবিবার আমদাবাদে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে রিঙ্কু বলেন, ‘নিজের মধ্যে বিশ্বাস ছিল যে আমি এটা করতে পারব। কারণ গত বছর লখনউয়ের (লখনউ সুপার জায়েন্টস) বিরুদ্ধে এরকম একটি ইনিংস খেলেছিলাম। ওই ম্যাচেও নিজের উপর আস্থা রেখেছিলাম। এই ম্যাচে রেখেছি। রানা ভাই (নীতীশ রানা) বলেছিল যে নিজের উপর ভরসা রাখ। শেষপর্যন্ত খেলিস। তারপর দেখা যাবে যে কী হয়।’
মাঠের বাইরে থেকে রানা বললেও ২২ গজে উমেশ তাঁকে সবসময় ভরসা জুগিয়ে যাচ্ছিলেন বলে জানান রিঙ্কু। তিনি বলেন, ‘ব্যাট লাগানোর চেষ্টা করছিলাম আমি। ব্যাট লেগে গেলে ছক্কা হয়ে যাবে। ভাইয়া (রিঙ্কুর সঙ্গে উমেশ খেলছিলেন, প্রথম বলে এক রান নিয়ে রিঙ্কুকে স্ট্রাইক দেন উমেশ) খুব সাহায্য করেছে। ভাইয়া বলছিল যে রিঙ্কু বেশি ভাবিস না। যেরকম বল আসছে, সেরকম খেলিস।’
আর সত্যিই কী খেলাটাই না খেললেন রিঙ্কু। একটা সময় সকলেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল যে জেতা ম্যাচটা কেকেআর হেরে আসছে। দু’পয়েন্ট মাঠে ফেলে দিয়ে আসছে কেকেআর। এমনকী ২০ তম ওভার যখন শুরু হচ্ছিল, তখন ধারাভাষ্যকাররাও কার্যত বলে দেন যে গুজরাট জিতে গিয়েছে। যদিও সেটায় তাঁদের দোষও নেই। ছয় বলে ২৯ রান বাকি থাকলে, হাতে তিন উইকেট পড়ে থাকলে এবং ক্রিজে রিঙ্কু ও উমেশ থাকলে কে বা ভাবতে পারতেন যে ম্যাচটা কেকেআর জিততে পারে।
‘কে বা ভাবতে পারেন’ অবশ্য রিঙ্কুই দিয়ে দেন। যশ দয়ালের বলে পরপর পাঁচটি ছক্কা মেরে কেকেআরকে জিতিয়ে দেন রিঙ্কু। শেষপর্যন্ত ২১ বলে ৪৮ রানে অপরাজিত থাকেন। স্বভাবতই ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন। যিনি পুরস্কার নেওয়ার সময় হাসিমুখে সাফল্যের রহস্য ফাঁস করে বলেন, সত্যি কথা বলতে এরকম কিছু ভাবিনি। যেরকম বল আসছিল, সেরকমভাবেই খেলছিলাম। এরকম কিছু ভাবিনি যে পাঁচটি ছক্কা মারব। লেগে যাচ্ছিল ব্যাটে। আত্মবিশ্বাস ছিল। আর ম্যাচ জিতে গেলাম।’