“২০১৯-এর ভূতটা ফের ঘাড়ে চাপবে না তো” টিম ইন্ডিয়ার বড়ো সমস্যা খুঁজে পেলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার !

যখন চলতি বিশ্বকাপের সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছিল, তখন ভারত বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচ ঘিরে অনেক জল্পনা হয়েছিল। এই দ্বৈরথ রোমহর্ষক হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল। ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ সব সময়েই হাইভোল্টেজ থাকে। রবিবার লখনউতে যখন এই দুই পক্ষ মুখোমুখি হয়, তখন অবশ্য পরিস্থিতি একেবারে আলাদা। এর মানে এই নয় যে, ভারত এবং ইংল্যান্ড সমর্থকেরা আর একটি উচ্চ মানের ম্যাচ দেখতে পাবে না! দু’টি দল যদিও পারফরম্যান্সের বিচারে দুই মেরুতে দাঁড়য়ে। ভারতের পক্ষে এক তরফা প্রতিযোগিতার সম্ভাবনা বেশি। তবে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া ইংল্যান্ড যে পাল্টা ঝাপটা মারবে না, এমন কথাও বলা যায় না।

ইংল্যান্ড এখনও পর্যন্ত এই টুর্নামেন্টে তাদের পাঁচ ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই হেরে বসে রয়েছে। এবং তাদের নেট রানরেট নেদারল্যান্ডসের চেয়ে সামান্য ভালো। শুধুমাত্র একটি অলৌকিক ঘটনা ছাড়া ইংল্যান্ডের পক্ষে পরবর্তী রাউন্ডে পৌঁছানো সম্ভবই নয়। এদিকে ভারত পাঁচ ম্যাচের মধ্যে সবকটিতেই জিতেছে। বিশ্বকাপে ভারতই এখনও পর্যন্ত একমাত্র অপরাজিত দল।ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তাদের প্রতিটি ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম পাওয়ারপ্লেতেই পরাজয়ের ভ্রুকুটি তারা দেখতে শুরু করেছিল। অন্যদিকে ভারতের ক্ষেত্রে বিষয়টি ঠিক উল্টো। তাদের প্রায় সব ম্যাচেই অর্ধেক পর্যায়েই জয় অনিবার্য বলে মনে হয়েছে।অধিনায়ক রোহিত শর্মা, তারকা প্লেয়ার বিরাট কোহলি, অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা, স্পিনার কুলদীপ যাদব এবং ফাস্ট বোলার জাসপ্রীত বুমরাহ- এই বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত ভারতের ভালো ফল করার পিছনে প্রধান কারণ।

রোহিত টপ অর্ডারে অনবদ্য। নতুন বলের তিনি যে রকম দাপট দেখাচ্ছেন, তাতে প্রতিপক্ষ বোলারদের মধ্যে ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তার অধিনায়কত্বও প্রশংসনীয়।ভারতের হয়ে ওপেনিং ব্যাটার হিসেবে রোহিতের অধিনায়কত্ব এবং প্রভাব সম্পর্কে বলতে গিয়ে, প্রাক্তন ক্রিকেটার এস বদ্রিনাথ, স্টার স্পোর্টসে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘প্রথমত, তার অধিনায়কত্ব খুব ভালো ছিল। ও সঠিক খেলোয়াড়দের সমর্থন করেছে। বিশেষ করে, ও শার্দুল ঠাকুরের উপর অনেক আস্থা দেখাচ্ছে, এবং সম্ভবত সেই পদক্ষেপের প্রতিদান দেওয়ার সময় এসেছে, কারণ হার্দিক পান্ডিয়া সম্ভবত পরের ম্যাচও খেলতে পারবে না। এবং শার্দুল ভালো খেলছে। রোহিত শর্মার অধীনে কুলদীপ যাদবও প্রস্ফুটিত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

আমি মনে করি, অধিনায়ক-খেলোয়াড়ের মধ্যে সম্পর্ক সত্যিই দৃঢ়। সামগ্রিক ভাবে আমি মনে করি, রোহিত একজন বড় ভাই ধরনের ক্যাপ্টেনের মতো। ও সহজ-সরল এবং ছেলেদের সঙ্গে ওর দারুণ সম্পর্ক রয়েছে। তাই, আমার মনে হয়, ও বেশ ভালো করছে, এবং ওর ব্যাটিং ফর্ম অসাধারণ। ও এর আগেও বলেছে যে, ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে ও খেলতে নেমেছে, এবং ঠিক সেটাই ও করছে।’

পান্ডিয়ার অনুপস্থিতি নিয়ে বদ্রিনাথ বলেছেন, ‘দেখুন হার্দিক একটি বড় মিস, কারণ ও হল সেই খেলোয়াড়, যে রোহিত এবং টিম ইন্ডিয়ার জন্য ভারসাম্য সরবরাহ করে। তবে আমি ব্যক্তিগত ভাবে একজন বোলারকে খেলতে দেখতে চাই, সেটা শামি হোক বা অশ্বিন হোক, তাতে কিছু যায় আসে না, কারণ আমি সেখানে এমন একজন বোলার চাই, যে ১০ ওভার বল করতে পারে। কারণ আমি শার্দুলকে ম্যাচে ১০ ওভার বল করতে দেখি না।’

বদ্রিনাথ, যিনি ২টি টেস্ট, ৭টি ওয়ানডে এবং একটি টি-টোয়েন্টিতে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন, তিনি বলেছেন ২০১৯-এর মতো পরিস্থিতি থেকে সতর্ক থাকতে হবে ভারতকে। সে বার ভারতের মিডল-অর্ডার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে হতাশাজনক পারফরম্যান্স করেছিল। তিনি বলেছেন, ‘দেখুন এটি একটি সত্যি কথা যে, ভারতের মিডল অর্ডার এখন সে অর্থে বিশ্বকাপে পরীক্ষিত নয়। তবে এটি উদ্বেগের বিষয় নয়, কারণ ভারত আধিপত্য বিস্তার করছে এবং টপ অর্ডার রান পাচ্ছে। তাই এটিকে উদ্বেগের বিষয় বলা যায় না। কিন্তু খেলাধুলার ক্ষেত্রে যা কিছু ঘটতে পারে। তবে আমি আশা করব, ২০১৯ সালে সেই ভূতটা ফের ভারতের ঘাড়ে চাপবে না। এটাই আমার একমাত্র উদ্বেগ।’