ট্যাক্সিচালকের ছেলেকে অন্ধ বলে কাজ দেই নি কেও, কঠোর পরিশ্রমে হলেন IAS অফিসার

এই রঙিন দুনিয়া যে ভালভাবে দেখতে পারেনি সে দেখেছিল একটা স্বপ্ন, হতে চেয়েছিল আইএএস অফিসার। শারীরিক অক্ষমতাকে পিছনে ফেলে মানসিক ক্ষমতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বালা নাগেন্দ্রন। আজ আমরা তারই বিষয়ে জানব। বালা চেন্নাইয়ের বাসিন্দা। তার বাবা ভারতীয় সেনার রিটায়ার্ড অফিসার, বর্তমানে তার বাবা চেন্নাইতে ট্যাক্সি চালক হিসেবে কাজ করছেন। তার মা একজন গৃহিনী। বালার স্কুলের শিক্ষা লিটল ফ্লাওয়ার কনভেন্ট ও কৃষ্ণ মিশন স্কুল থেকে হয়।

লয়লা কলেজ থেকে তিনি বি.কমের ডিগ্রী পান। ছোট থেকেই তিনি ভাল পড়াশুনায় হওয়ায় তার স্কুলের এক শিক্ষক তাকে আইএএস অফিসার হওয়ার পরামর্শ দেন। দশম শ্রেণী পর্যন্ত তিনি তামিল ভাষাতেই পড়াশোনা করেন। এরপর যখন তিনি দেখেন যে তার প্রায় সমস্ত বইই ইংরেজিতে লেখা তখন তিনি ইংরেজি ভাষা শেখার প্রতি জোর দেন। ইংরেজিতে লেখা বইগুলি কে ব্রেল লিপিতে অনুবাদ করতেও তাকে ঝক্কি পোহাতে হয়।

2011 সালে তিনি প্রথম ইউ পি এস সি পরীক্ষায় বসেন, কিন্তু সফল হতে পারেন না। এরপর তিনি পরপর চারবার পরীক্ষায় বসেন এবং চারবারই অসফল হন। এ ক্ষেত্রে অনেকেই হার মেনে নেয় কিন্তু বালা মানেননি। 2016 সালে বালা সফলতা পান এবং 927 রাঙ্ক প্রাপ্ত হন। এই রাঙ্কে তিনি এ গ্রেডের চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু আইএএস হওয়ার স্বপ্ন চোখে নিয়ে বড়ো হওয়া বালা এই চাকরি নেননি। তিনি আবার চেষ্টা করেন এবং 2017 তে পরীক্ষায় বসেন। কিন্তু এবার মাত্র এক নম্বরের জন্য তার সিলেকশন হয়না। আবার তিনি 2018 তে পরীক্ষায় বসেন।

এইবারও তিনিও সফল হতে পারেন না। নিজের দৃষ্টিহীনতা কে বাধা না মেনে প্রকৃতির আশীর্বাদ হিসেবেই বরাবর মেনে এসেছেন বালা। 2019 সালে তিনি আবার পরীক্ষা বসেন এবং 659 তম গ্রেড পেয়ে তার লক্ষ্যে পৌঁছে যান। আইএএস অফিসার হওয়ার পর বালা জানান তিনি শিশু শোষণের উপর কাজ করতে চান। তিনি জানান দারিদ্রতা ও বেকারত্বর সমস্যাগুলি সমাধান করার একমাত্র উপায় শিক্ষা তাই তিনি এইসবের ওপরেই জোর দিয়ে কাজ করতে চান।

নিজের প্রতিবন্ধকতাকে জয় করেও যে এতটা এগোনো যায় তা আরো একবার প্রমাণ করে দিলেন বালা নাগেন্দ্রন। আজ তিনি বহু মানুষের অনুপ্রেরণা।