কোটিতে একজনের হয়। এতটাই বিরল এই ক্যানসার (World Cancer Day)। স্বভাবতই বাড়িসুদ্ধ সবার রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছিল। ভেলোর থেকে মাসে মাসে ২৫ হাজার টাকার ওষুধ আসত। তাতেও নিরাময়ের কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছিল না। সেই তরুণী গৃহবধূকেই সুস্থ করে তুলেছে আয়ুর্বেদ। ডার্মাটোমায়াসাইটিস থেকে মুক্ত হয়ে দ্বিতীয় বারের জন্যে মা হয়েছেন সেই বধূ। আয়ুর্বেদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেই ছেলের নাম রেখেছেন অগ্নিবেশ। কিন্তু কিভাবে এত বড় সাফল্য এলো ?
সম্প্রতি খড়্গপুরের সেই তরুণী বধূ সপরিবার আসেন কলকাতার গ্রে স্ট্রিটের বিশ্বনাথ আয়ুর্বেদ মহাবিদ্যালয়ে। এখানেই সুপার ডা. দেবাশিস ঘোষের অধীনে ২০১৭ সালে আয়ুর্বেদ চিকিৎসা শুরু হয়েছিল রোগীর। হলুদ, মঞ্জীষ্ঠা, গুরুচি, নিমের ফোটানো জলে বাষ্পস্নান আর মকরধ্বজ, হীরক ভস্ম, গোধন অর্ক, জয়মঙ্গল রসের মতো কিছু ওষুধ। তাতেই কর্কটমুক্তি।এই বাংলারই চিকিৎসক ডা.সৌমিত্রি ত্রিপাঠী আয়ুর্বেদের কল্যাণে গুজরাটের হাজার দুয়েক ক্যানসার রোগীকে সুস্থ করেছেন। রেকটাল ক্যানসার থেকে লাং ক্যানসার, সব ধরনের রোগকেই বৈদিক পথে নির্মূল করেছেন। রক্তপিত্ত দোষ কাটানোর ওষুধে নিয়ন্ত্রণে এনেছেন ব্লাড ক্যানসার। এমনই দাবি করেছেন সৌমিত্রিবাবু।
তিনি জানিয়েছেন, “আমি যত রোগী দেখি তার ৮০ শতাংশই ক্যানসার আক্রান্ত। বেশিরভাগই চতুর্থ পর্যায়ের রোগী। বলতে দ্বিধা নেই, এর মধ্যে ৪০ শতাংশকেই সম্পূর্ণ সুস্থ করতে পেরেছি। রেকটাল ক্যানসারের রোগী মাত্র ১৫ দিনের ওষুধে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ডায়াফ্রাম প্যারালাইসিস হয়ে যাওয়া ৬০ বছরের লাং ক্যানসার রোগী আয়ুর্বেদিক মতে চিকিৎসা করিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন, এমন নজিরও আছে।” খাদের কিনারায় দাঁড়ানো এমন অনেক রোগী আছেন যাঁরা বিকল্প পদ্ধতিতে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হয়েছেন। নিজেদের জীবনরেখাকে প্রলম্বিত করেছেন। দেবাশিসবাবুর ত্বকের ক্যানসার সারিয়ে তোলার ঘটনা আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। মান্যতা পেয়েছে বিশ্বের দরবারে।
এমন অনেক কর্কটমুক্তির ঘটনাই আছে, যা বিভিন্ন ফরম্যাটে নথিভুক্ত হয়েছে। যা শুনলে রূপকথা মনে হয়। তাইতো আমেরিকার মতো নাকউঁচু দেশও ক্যানসার নিরাময়ের গবেষণায় আয়ুর্বেদের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে ভারতের সঙ্গে যৌথ কর্মসূচি নিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মত, মডার্ন মেডিসিনে ক্যানসার চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। সেই তুলনায় আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা অনেক সুলভ। তাছাড়া, এমন অনেক ক্যানসার আছে যা বর্তমান চিকিৎসাবিজ্ঞানে দুরারোগ্য। তার অনেকগুলোরই বৈদিক পথে নিরাময় বা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। তাই গুরুত্ব-সহ ক্যানসার মোকাবিলার বৈদিক পথ নিয়ে গবেষণা বা ট্রায়াল হওয়া উচিত।