‘আমি ক্যাপ্টেন হলে করতাম না’,রোহিতের সিদ্ধান্ত নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ হয়ে বি’স্ফোরক মন্তব্য সৌরভের !

আইসিসি ব়্যাঙ্কিং অনুযায়ী এই মুহূর্তে বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট বোলার হলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ফাইনালের আগে পর্যন্ত চলতি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের হয়ে সব থেকে বেশি ৬১টি উইকেট নিয়েছেন অশ্বিন। ভারতের বাকি বোলাররা কেউই ৪৫টি উইকেটের গণ্ডিও ছুঁতে পারেননি। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে যে, ভারতকে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে তুলতে বল হাতে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছেন অশ্বিনই। শুধু বল হাতেই নয়, বরং ব্যাট হাতেও দলের পারফর্ম্যান্সে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তিনি। অথচ টেস্টে চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট বাদ দেয় অশ্বিনকেই।

দলের সেরা বোলারকে ভারত মাঠের বাইরে বসিয়ে রাখায় বেজায় চটলেন সুনীল গাভাসকর। তিনি রোহিত শর্মাদের এমন সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেন। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারেননি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, হরভজন সিংরাও।এই প্রসঙ্গে গাভাসকর বলেন, ‘সেরা বোলারকে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মাঠে নামানো দরকার। এক্ষেত্রে অশ্বিনকে বাদ দেওয়া ঠিক হয়নি ভারতের। তিনজন পেসার খেলিয়ে অশ্বিনকে প্রথম একাদশে রাখাই যেত। ভাবুন একবার, আইসিসি ব়্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর বোলার, সেই কিনা দলে নেই। বিশ্বের সেরা বোলারকে বাদ দেওয়া আমার পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন। তার উপর অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপে কতজন বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান রয়েছে দেখুন। ডেভিড ওয়ার্নার, উসমান খোয়াজা, ট্রেভিস হেড, অ্যালেক্স ক্যারি, মিচেল স্টার্ক, সবাই বাঁ-হাতে ব্যাট করে।

এমন অবস্থায় আপনি একজন অফ-স্পিনারকে খেলাবেন না!’এখন প্রশ্ন হল, ৩ জন পেসার খেলিয়ে অশ্বিনকে মাঠে নামাতে হলে ভারতের কাকে বাদ দেওয়া উচিত ছিল? এমন প্রশ্নের উত্তরও দেন গাভাসকর। তিনি স্পষ্ট জানান যে, তিন পেসার হিসেবে মাঠে নামানো উচিত ছিল মহম্মদ শামি, মহম্মদ সিরাজ ও শার্দুল ঠাকুরকে। উমেশ যাদবকে বসিয়ে অশ্বিনকে খেলানো উচিত ছিল রোহিতদের। নিজের এমন মতামতের পিছনে যুক্তিও দিয়েছেন সানি।গাভাসকর বলেন, ‘উমেশ যাদবকে বসিয়ে অশ্বিনকে খেলানো যেত। আসলে উমেশ যাদব আইপিএলেও খুব বেশি ম্যাচ খেলেনি। চোটের জন্য মাঠের বাইরে ছিল। অশ্বিন সেদিক থেকে আইপিএলে ছন্দে ছিল। যারা পর্যাপ্ত ম্যাচ প্র্যাক্টিস করে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেমেছে, তাদের আত্মবিশ্বাস বেশি হবেই। অস্ট্রেলিয়ার দিকে তাকান, খোয়াজা বেশ কিছুদিন কোনও ম্যাচ খেলেনি। রান পায়নি প্রথম ইনিংসে। স্মিথ-ল্যাবুশান কাউন্টিতে কিছু ম্যাচ খেলেছে। ওরা তুলনায় প্র্যাক্টিসে ছিল।’

গাভাসকরের কথার রেশ টেনে হরভজন সিং বলেন, ‘পরিস্থিতি যে রকমই হোক না কেন, যে বোলার তোমাকে ফাইনালে তুলতে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছে, তাকে খেলানো উচিত। পরিস্থিতি তো বদলাতে থাকবে। তাছাড়া এই পিচে স্পিনারদের সফল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ম্যাচের আগেই অনুমান করেছিলেন যে, ভারত হয়ত চার পেসারে দল সাজাবে এবং একমাত্র স্পিনার হিসেবে জাদেজা সুযোগ পেতে পারেন। বাস্তবে সৌরভের অনুমান সত্যি প্রমাণিত হয়। যদিও সৌরভ স্পষ্ট জানান যে, তিনি ক্যাপ্টেন হলে অশ্বিনের মতো বোলারকে মাঠের বাইরে বসিয়ে রাখা তাঁর পক্ষে কঠিন হতো।

সৌরভ বলেন, ‘সব ক্যাপ্টেনের চিন্তা-ভাবনা আলাদা। রোহিতের সঙ্গে আমার দৃষ্টিভঙ্গির তফাৎ রয়েছে। ও বলতে পারে যে, পিচে ঘাস রয়েছে, মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া এবং আমরা প্রথমে বল করার পরিকল্পনা করেছি, তাই অশ্বিনের জায়গা হয়নি। তবে আমার মতে টেস্টে পাঁচ দিনের কথা ভেবে কম্বিনেশন নির্ধারণ করা উচিত। আমি ক্যাপ্টেন হলে অশ্বিনের মানের স্পিনারকে এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মাঠের বাইরে রাখা আমার পক্ষে মুশকিল হতো। টেস্টে ৫০০-র কাছে উইকেট নিয়েছে যে, তার এই দলে জায়গা পাওয়া উচিত।’