এশিয়া কাপের শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সুপার ফোরের ম্যাচ হেরে ফাইনাল থেকে ছিটকে গিয়েছে পাকিস্তান। এই দুই দলের কাছে ম্যাচটি মরণ-বাচন ছিল। যে দল জিততো তারা ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে খেলতো। পাক বনাম শ্রীলঙ্কা সেই ম্যাচ বৃষ্টির জন্য ৪২ ওভারে নেমে আসে এবং শেষ ওভারে টানটান উত্তেজনা ম্যাচে জয়লাভ করে শ্রীলঙ্কা। লঙ্কার অলরাউন্ডার ব্যাটার আসালঙ্কার অসাধারণ পারফরম্যান্স করে পাকিস্তানের মুখ থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়ে আসে। আর এই হারের পরেই শোনা যাচ্ছে পাকিস্তানের ড্রেসিংরুমের অবস্থা ভালো নয়।কয়েকজন ক্রিকেটার অধিনায়কের একাধিক সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না।
এই সমস্যা শুধুমাত্র শ্রীলঙ্কা পাকিস্তান ম্যাচেই দেখা যায়নি। শোনা যাচ্ছে টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই সমস্যা দেখা দিয়েছে পাক ড্রেসিংরুমে। পাকিস্তানের প্রাক্তন উইকেটরক্ষক মঈন খান একটি সাক্ষাৎকারে জানান, ‘আমরা পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে দেখেছি বাবরের দিকে কেউই কোনও সময় এগিয়ে যায়নি। সবাই যেন ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল।’এশিয়া কাপ শেষ হলেই ভারতের মাটিতে বসবে একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপের আসর। তার আগে পাকিস্তান দলের এই সমস্যা বিশ্বকাপে তাদের ক্ষেত্রে যে অসুবিধা তৈরি করতে পারে সেই বিষয়ে কারো সন্দেহ নেই।
তবে অধিনায়ক এর সঙ্গে সমস্যার বিষয়টি পুরোপুরিভাবে জানা যায়নি। জিও টিভির সঙ্গে সাক্ষাৎকারের সময় পাকিস্তানের প্রাক্তন উইকেটরক্ষক মঈন খান এই বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান দলের যদি কোনও সমস্যা থাকে তা বিশ্বকাপের আগে ঠিক করে নেওয়া দরকার। সমস্যা মিটে গেলে দল আরো বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে। ড্রেসিংরুমের কোন বিবাদ ইন মিডিয়ার সামনে প্রকাশ্যে চলে আসছে তা দলের জন্য মোটেই ভালো খবর নয়। ক্রিকেটারদের যদি বাবরের সঙ্গে সমস্যা থাকে, বাবর যদি প্রধান কোচ বা টিম ডিরেক্টরের অনুপস্থিতিতে কোনও সমস্যার ঠিকভাবে সমাধান না করতে পারে তাহলে সেটা খুব দুর্ভাগ্যজনক।কারণ এই ধরনের বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করা অধিনায়কেরই কাজ।’ দেখুন সেই ভিডিও :
সেই সঙ্গে প্রাক্তন তারকা ক্রিকেটার পরামর্শও দেন। তিনি বলেন, ‘সমস্যা কাটিয়ে উঠতে নিজেদের মধ্যে ড্রেসিংরুমে কথা বলতে হবে। যদি আমি অধিনায়ক হই, অন্য ক্রিকেটার যদি ভালো পারফরম্যান্স না করে তাহলে আমি তাকে বলবো হয়তো কিছুটা কড়া চোখে তাকাব। কিন্তু পরে শান্তভাবে তাকে বোঝাবো আরও ভালো পারফর্ম করতে হবে। দল তার কাছ থেকে কি প্রত্যাশা করছে সেটাও জানাতে হবে। কিন্তু অধিনায়ক যদি তাকে গুরুত্ব না দিয়ে কথা বলে তখন সেই ক্রিকেটার ভাববে তাকে নিয়ে মজা করা হচ্ছে। সবারই একটা ইগো আছে। বাবরকে এই ম্যানেজমেন্টের বিষয়কে আরও সতর্ক হতে হবে।’
এখানে না থেমে তিনি আরও বলেন, ‘আমি আগেও এটা নিয়ে মন্তব্য করেছি। আমরা টুর্নামেন্ট জুড়ে দেখেছি, বিশেষ মুহূর্তে কোনও ক্রিকেটার বাবরের দিকে যায়নি। রিজওয়ানও এগিয়ে আসেনি, এমনকী সহ-অধিনায়কও তাঁর কাছে আসেনি। কেউ তার কাছে যাচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, দলের মধ্যে কোন ঐক্য নেই।’
সব মিলিয়ে, ভারত এবং শ্রীলংকার কাছে এই পরাজয় পাকিস্তান দলকে যে ভিতর থেকে ভেঙে ফেলেছে এই বিষয়টা বলাই যায়। এখন এটাই দেখার যে বিশ্বকাপে তারা পুনরায় ফিরতে পারবে কিনা।