তখন ভারত মাত্র ৪৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বসেছিল। পাকিস্তানের জ্বলন্ত পেস বোলিংয়ের আঘাতে একে একে সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন রোহিত শর্মা (২২ বলে ১১), বিরাট কোহলি (৭ বলে ৪), শ্রেয়স আইয়ার (৯ বলে ১৪)। সেই কঠিন সময়ে ক্রিজে এসেছিলেন ইশান কিষাণ। তিনি আসার পর পরই আবার সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন শুভমন গিলও (৩২ বলে ১০)। ৬৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ভারত যখন মারাত্মক চাপে, তখন হার্দিক পান্ডিয়ার সঙ্গে জুটি বেঁধে ভারতের হাল শক্ত হাতে ধরেন ইশান। পাক বোলারদের চোখে চোখ রেখে লড়াই করে গিয়েছেন ইশান। সেই সঙ্গে গড়ে ফেলেছেন একাধিক নজিরও।
ভারতের উইকেট-রক্ষক ব্যাটসম্যান ইশান কিষাণের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এটাই ছিল প্রথম ম্যাচ। এশিয়া কাপেও অভিষেক হল তাঁর। আর অভিষেকেই মন জয় করলেন ইশান। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দুরন্ত হাফসেঞ্চুরি করে স্পর্শ করলেন মহেন্দ্র সিং ধোনির নজির। জায়গা করে নিলেন যুবরাজ সিং-এর পাশে।প্রসঙ্গত, শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডির পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেই পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়েছে ভারত। আর এই ম্যাচেই প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে অভিজাত তালিকায় যোগ দিয়েছেন। ইশান কিষাণ এখন এশিয়া কাপে অর্ধশতরান করা চতুর্থ ভারতীয় উইকেটরক্ষক হয়েছেন।
ক্যান্ডিতে ইশান কিষাণের পঞ্চাশের আগে শুধুমাত্র ধোনি এবং এসসি খান্না এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন। ধোনি ২০০৮ এবং ২০১০ সালে দু’বার কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন।এখানেই শেষ নয়। ইশান কিষাণ নবম ভারতীয় ব্যাটসম্যান, যিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাঁর প্রথম ওডিআইতে ৫০-এর বেশি স্কোর করেছেন। এবং যুবরাজ সিং-এর পরে একমাত্র দ্বিতীয় বাঁ-হাতি প্লেয়ার হিসেবে এই স্কোর তিনি করেছেন। আর গত ১০ বছরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের একমাত্র উইকেটরক্ষক হিসেবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওয়ানডে-তে ৩০-এর বেশি রান করেছেন ইশান।
এই নিয়ে পরপর চারটি ওডিআই-এ হাফসেঞ্চুরি করলেন ইশান। এদিন তিনি ছ’টি বাউন্ডারি এবং একটি ছক্কার হাত ধরে ইশান ৫৪ বলে তাঁর হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন। ওয়ানডে-তে এটি তাঁর সপ্তম অর্ধশতরান। এর আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে যথাক্রমে ৫২, ৫৫ এবং ৭৭ রান করেছিলেন ইশান কিষাণ। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং সুরেশ রায়নার পরে ইশানই তৃতীয় বাঁ-হাতি ব্যাটার যিনি পরপর চারটি ওডিআই-এ হাফসেঞ্চুরি করলেন।এদিন অবশ্য অল্পের জন্য সেঞ্চুরি করা হল না ইশানের।
৮১ বলে ৮২ রান করে হরিস রউফের বলে বাবর আজমকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ইশান। তাঁর এই ইনিংসে রয়েছে ৯টি চার এবং একটি ছয়। এই রান করে তিনি আরও একটি নজির গড়েন। ইশানের ৮২ রান পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ওডিআই খেলা ভারতীয়দের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। এর আগে ১৯৮৫ সালে এমএসজি-তে ভারতের হয়ে একমাত্র মহম্মদ আজহারউদ্দিনের অপরাজিত ৯৩ রান করেছিলেন।