“এত সহজে কিভাবে রিঙ্কু?” প্রশ্নের জবাবে আবেগপ্রবণ মন্তব্য করলেন রিঙ্কু সিং,স্যালুট নেটিজেনদের

যে ইনিংসের জন্য অপেক্ষা করছিল সারা ভারতের ক্রিকেট ভক্তরা সেই রিঙ্কু সিং এর অনবদ্য ইনিংস কালকে এসেছে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে। প্রথম ম্যাচে তাকে ব্যাট করতে হয়নি তবে দ্বিতীয় ম্যাচে তিনি ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছিলেন, আর সুযোগ পেয়েই তিনি প্রমাণ করেছেন যে ভারতীয় দল যে ফিনিশারের খোঁজ করছে সম্ভবত তিনিই সেই ফিনিশার হতে চলেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে ভালো পারফর্ম্যান্স উপহার দিয়েছেন রিঙ্কু সিং। যদিও তাঁকে ক্রিকেটার হিসেবে পরিণত করে তুলেছে আইপিএল। প্রকৃত অর্থে ভারতীয় ক্রিকেটের গণ্ডি ছাড়িয়ে রিঙ্কুকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটমহলে পরিচিতি এনে দিয়েছে ইন্ডিয়ান প্রমিয়র লিগ।

যে আইপিএলে ভালো খেলার সুবাদে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন রিঙ্কু সিং, টিম ইন্ডিয়ার জার্সিতে মাঠে নেমে সেই ইন্ডিয়ান প্রিমিয়র লিগের শিক্ষাই কাজে লাগালেন তিনি। সচরাচর বলা হয়ে থাকে যে, ঘরোয়া ক্রিকেট আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মধ্যে ফারাক থাকে বিস্তর। তবে আইপিএলের সঙ্গে আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটের আবহের যে বিশেষ কোনও তফাৎ নেই, সেটা প্রমাণ করলেন রিঙ্কু।রবিবার ডাবলিনে আইপিএলের ঢংয়েই প্রথমে দলের ইনিংসকে গভীরে টেনে নিয়ে যান রিঙ্কু। শেষবেলায় ব্যাট হাতে ঝড় তুলে টিম ইন্ডিয়াকে পৌঁছে দেন বড় রানের লক্ষ্যে। জাতীয় দলের হয়ে প্রথমবার ব্যাট করতে নেমে রিঙ্কু সিং যেরকম পরিণত ক্রিকেট উপহার দেন, তার সুবাদেই হাফ-সেঞ্চুরি করা রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে টপকে তিনি ম্যাচের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জেতেন।

সঙ্গত কারণেই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উচ্ছ্বসিত শোনায় রিঙ্কুকে। নিজের আবেগ ও খুশি লুকিয়ে রাখেননি টিম ইন্ডিয়ার নতুন তারকা। ইংরেজিতে সড়গড় নন। তাই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ক্যাপ্টেন বুমরাহ রিঙ্কুর দোভাষীর ভূমিকা পালন করেন। আইপিএল থেকে উঠে এসে জাতীয় দলকে নির্ভরতা দেওয়া প্রসঙ্গে রিঙ্কু বলেন, ‘দারুণ লাগছে। আমি সেটাই করার চেষ্টা করেছি, যেটা এতদিন আইপিএলে করে এসেছি। দেশের জার্সিতে এটা আমার দ্বিতীয় ম্যাচ। তবে এই প্রথমবার ব্যাট করার সুযোগ পাই। আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। মাথা ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করছিলাম। ইনিংস টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। জানতাম শেষ বেলায় সুযোগ নেওয়া যাবে।’

রিঙ্কু আরও বলেন, ‘১০ বছর হয়ে গেল ক্রিকেট খেলছি। লড়াইটা সহজ ছিল না। কঠিন পরিশ্রম করেছি। তার ফলেই জাতীয় দলে জায়গা পেয়েছি। প্রথমবার ব্যাট করতে নেমে ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার জিতেছি। এর থেকে বেশি আর কীই বা চাইতে পারতাম।’ উল্লেখ্য, আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজের দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচে ভারত একসময় ১৫০ রানের গণ্ডি টপকাতে পারবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। শেষবেলায় ব্যাট হাতে ঝড় তুলে রিঙ্কু সিং দলকে ১৮০-র গণ্ডি পার করান। ২টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে মাত্র ২১ বলে ৩৮ রানের ধ্বংসাত্মক ইনিংস খেলে মাঠ ছাড়েন রিঙ্কু।

আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে এই সিরিজে ভারতীয় দলের তরফ থেকে সবথেকে বড় চমক ছিল রিঙ্কু সিং। তিনি কিভাবে ব্যাটিং করবেন তার অপেক্ষা করছিল সারা ভারতের ক্রিকেট ভক্তরা পাশাপাশি, বুমরাহ একটা লম্বা সময় পর ভারতীয় দলে প্রত্যাবর্তন করছেন, তিনি কি রকম ভাবে ফর্মে ফিরবেন সেটাও দেখার ছিল, তবে সব মিলিয়ে দুটোতেই রীতিমতো বলা যায় সফল হয়েছে ভারতের দল এবং ভারতের এই দুই প্লেয়ার নজর কারা পারফরমেন্স করেছে।