আসমুদ্র হিমাচল ভাবছিল, এবার বুঝি ভারতীয় দলে ডাক আসবে, কিন্তু হল না। এবারও শিঁকে ছিড়ল না রিঙ্কু সিংয়ের। আইপিএলে ভাল খেলার পরেও দরজা খোলেনি জাতীয় দলের। অথচ নাইট রাইডার্স তারকার আইপিএলের পারফরম্যান্সে সবাই গদগদ ছিল।ক্যারিবিয়ান সফরে কেকেআর তারকা দলে আসবেন হাসতে হাসতে, সবাই ধরেই নিয়েছিল। কিন্তু তার জায়গায় সুযোগ দেওয়া হয়েছে তিলক বর্মাকে, জসওয়াল যে সুযোগ পাবে সেই নিয়ে কারো কোনো সন্দেহ ছিল না, কিন্তু রিংকু সিং এর আগে তিলক বর্মা কিভাবে সুযোগ পায় সেটা প্রশ্ন করছে। অনেকে মুম্বাইয়ের লবিকে দায়ী করছেন যে আগরকর দায়িত্ব নিতেই একজন মুম্বাই প্লেয়ার কে সুযোগ করে দিলেন ভারতীয় দলে। তাই স্বপ্নভঙ্গের পরে রিঙ্কু নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্য বার্তা দিয়েছেন।
তিলক বর্মা পুরো সিজন খেলে যে রান করেছেন রিঙ্কু তার থেকে অনেক বেশি রান করেছে। মিডিল অর্ডারে খেলা তিলক বর্মা মাত্র ৪২ এর এভারেজ এর সাথে ৩৪৩ রান করেছেন, সেখানে অনেকটা নিচের দিকে ব্যাট করা রিঙ্কু সিং ৪৭৪ রান করেছে প্রায় ৬০ এর এভারেজে, যে অধিকাংশ দিন ব্যাট করার সুযোগই পায় না, সুযোগ পেলেও কখনো চার পাঁচ ওভার বা ২-৩ ওভারের বেশি তার হাতে থাকে না। এতটা কঠিন পরিস্থিতিতে নেমেও এত রান করা সত্ত্বেও তাকে বাদ দিয়ে নেওয়া হলো তিলক বর্মাকে এখানে লবি ছাড়া আর কি দেখতে পাওয়া যায়? পুরো ব্যাপারটিতে ক্ষুব্ধ হলেও মাথা ঠান্ডা রেখে ইনস্টাগ্রামে নিজের জবাব দিয়েছে রিংকু সিং।
আলিগড়ের ক্রিকেটার নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে একটি উদ্ধৃতি তুলে ধরে জানিয়েছেন, ‘কারও কাছে সোফা শুধুই একটি আসবাব। আবার কারও কাছে সুযোগ পাওয়ার একটি মাধ্যম।’ এই উদ্ধৃতিটির নীচে লেখা উইলিয়াম শেক্সপিয়ার। প্রাক্তন পেসার অজিত আগরকারের নির্বাচন কমিটি দায়িত্ব নিয়েই বড় প্রশ্নের মুখে। অথচ অনেকেই মনে করছেন, রিঙ্কুকে হয়তো আরও বড় কিছুর জন্য ভেবে রেখেছেন নির্বাচকরা। তাঁরা হয়তো তাঁকে বিশ্বকাপের দলের কথা ভেবে সরিয়ে রাখলেন।দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা রিঙ্কু সহজে যে ভেঙে পড়বেন না, তা তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন ছোট্ট বার্তায়।
তাতে পরিষ্কার ইঙ্গিত রয়েছে, তিনি লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে পালিয়ে যাবেন না। তিনি পরিশ্রমের জন্য প্রস্তুত।শাহরুখের দলের হয়ে এই মরসুমে সব থেকে ধারাবাহিক ক্রিকেট খেলেছেন তিনি। ১৪টি ম্যাচে ৪৭৪ রান করেছেন রিঙ্কু। ৫৯.২৫ গড় ও ১৪৯.৫২ স্ট্রাইক রেট ছিল তাঁর। গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে শেষ পাঁচ বলে পাঁচটি ছক্কা মেরে কেকেআরকে জিতিয়ে রাতারাতি নায়কের মর্যাদা পেয়েছিলেন রিঙ্কু।
সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধেও শেষ বলে চার মেরে দলকে জেতান এই বাঁহাতি ব্যাটার। তাই তাঁকে উপেক্ষা করতেই অনেকে আগরকারকে মুম্বই মাফিয়া বলে কটাক্ষও শুরু করে দিয়েছেন। সব মিলিয়ে ভারতীয় দলের সিলেক্ট হওয়ার রাস্তায় তিনি যে সংগ্রাম করতে চাইছেন সে বিষয়টা পরিষ্কার হয়েছে তবে খুব বেশিদিন তাকে যে অপেক্ষা করতে হবে সেরকম নয় তার কারণ যেভাবে তিনি performance করছেন তাতে তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন যে তার মধ্যে দম আছে, সুতরাং আজ না হলেও কাল, কয়েক মাস পর কি এক বছর পর ভারতীয় দলে তিনি সুযোগ পাবেন এই নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যেখানে সিনিয়রদের আর সেভাবে ধরা হচ্ছে না সেখানে যুব ক্রিকেটারদের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে।