বিগ আপডেট:ভারতের ৫ জন ক্রিকেটারের কেরিয়ার শেষ করে দিল BCCI

বর্তমানে ভারতীয় দল মুখোমুখি হয়েছে আফগানিস্তানের এবং আজকে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে চলেছে। ভারতীয় দলে একদিকে যেমন প্রত্যাবর্তন করেছেন রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি পাশাপাশি আফগানিস্তান দলের রাশিদ খান কে দেখা যাবে না চোটের জন্য তিনি মাঠের বাইরে থাকছেন। বিশ্বকাপের পর বারংবার এই প্রশ্ন উঠেছিল যে রোহিত এবং বিরাট কে টি-টোয়েন্টি দলে দেখা যাবে কিনা, আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে রীতিমত তাদেরকে তো দলে পাওয়া যাচ্ছে কিন্তু পাঁচ জন ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার রীতিমতো শেষ করে দিল বিসিসিআই।

যে ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার রীতিমতো শেষ করে দেওয়া হল সবার প্রথমে যার নাম আসবে সেটা হচ্ছে ইউজি চাহাল, অসংখ্য ম্যাচে তিনি ভারতীয় দলের জন্য অসংখ্য উইকেট নিয়েছেন এবং ভারতীয় দলকে জয়লাভ করতে সাহায্য করেছেন। ভারতের ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি দলে তিনি একটা অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিলেন। কিন্তু তার সত্বেও বিগত একটা লম্বা সময় ধরে তাকে ভারতীয় দলে দেখা যাচ্ছে না। কোথাও ভারতীয় দল একদিকে যেমন বাঁহাত দিয়ে স্পিনার হিসেবে যাদের যাকে সঙ্গে রাখছে পাশাপাশি আর একজন স্পিনারের জায়গায় কুলদীপকে রাখছে এবং সেখানে কোনভাবে জায়গা পাচ্ছেন না চাহাল। আর আফগানিস্তান সিরিজে তাকে দলের বাইরে রেখে বিসিসিআই স্পষ্ট করে দিল যে তাকে আর ভারতীয় দলে রাখার কোন প্রশ্নই নেই।

দ্বিতীয় যে ক্রিকেটারকে ভারতীয় দলের বাইরে রাখা হয়েছে এবং তার কেরিয়ার কে রীতিমতো এখানেই ফুলস্টপ করে দেওয়া হয়েছে তিনি হচ্ছেন ভুবনেশ্বর কুমার। ভুবনেশ্বর একটা লম্বা সময় ধরে ভারতীয় দলের সাথে যুক্ত রয়েছেন, জাহির খান, আসিস নেহরা এরা যখন ভারতীয় দল থেকে ধীরে ধীরে সরে যায় সেই সময় ভুবনেশ্বর কুমার ভারতীয় দলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন বোলার ছিলেন। কিন্তু তার সাথে বিগত কয়েক বছর ধরে তাকে ভারতীয় দলে যুক্ত করা হচ্ছে না, ভুবনেশ্বর কুমারের বোলিংয়ের গতি একটা বড় প্রশ্ন অবশ্যই হতে পারে কিন্তু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে গতিটাই আসল নয়, যে ধরনের বোলিং তিনি ডেভলপ করেছেন এবং বিভিন্ন ধরনের স্লোয়ার এবং ইয়র্কার যেভাবে তিনি তৈরি করেছেন তাতে ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে তার থেকে ঘাতক বলা আর কেউ হতে পারে না। সিরাজ এবং বুমরার সাথে তিনি ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন বোলার হতেই পারেন। কিন্তু তার সত্ত্বেও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজে তাকে দলে না নিয়ে বিসিসিআই স্পষ্ট করে দিল যে তাকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত দেখছেনা। আর ওয়ানডে দলে অবশ্যই তিনি গতির জন্য জায়গা পাবেন না, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এমন একটা জায়গা যেখানে গতির অতটা দরকার হয়না বিভিন্ন রকমের ভ্যারাইটি স্লো বল, ইয়র্কর এরকম করতে পারলে তার কাজ বেশি। তার সত্ত্বেও ভুবনেশ্বর কুমারের ক্যারিয়ার রীতিমতো শেষ করে দেওয়া হলো।

পরবর্তী যে ক্রিকেটারের কথা বলব যাকে ভারতীয় দল থেকে রীতিমত বের করে দেওয়া হল সেটা হচ্ছে ঈশান কিষান। একটা লম্বা সময় ধরে তিনি ভারতীয় দলের সাথে রয়েছেন ভারতের প্রত্যেকটি ম্যাচে তিনি যাচ্ছেন কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাকে ম্যাচে নামতে হয় না, তিনি জায়গা পান না। এর ফলে তিনি মানসিকভাবে বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন এবং কিছুটা বিশ্রাম চেয়েছিলেন যার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে তিনি ছুটির আবেদন করেন এবং বিসিসিআই তাকে সেই ছুটি দেয়। কিন্তু তার সত্বেও বিসিসিআই তরফ থেকে আফগানিস্তান সিরিজে ঈশান কৃষাণকে দলে রাখা হয়নি এবং তাকে রীতিমতো এক ধরনের শাস্তি দেওয়া হয়েছে এটা বলা যায়। তার কারণ ঈশান কে দুবাইয়ে ধোনির সাথে পার্টি করতে দেখা গিয়েছিল, বিসিসিআই এর কর্তারা এখানে প্রশ্ন তুলেছেন যে কেন অসুস্থতার বাহানা দিয়ে সে দুবাইয়ে পার্টি করছে। কিন্তু এখানে ব্যাপার হলো যার মানসিক সমস্যা রয়েছে সে যদি আর পাঁচটা মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করে, পার্টি করে তাহলে তার সেই মানসিক সমস্যাটা কিন্তু ওই ভাবেই দূর হবে, বাড়িতে মুখ ঢুকিয়ে বসে থাকলে কিন্তু কোনভাবেই মানসিক সমস্যা দূর হয় না। এই সামান্য জিনিসটা না বুঝে তাকে একটা রীতিমতো শাস্তি দিয়ে দিল বিসিসিআই এবং আগামী একটা লম্বা সময় ভারতীয় দলে তাকে দেখা যাবে না এটা পরিষ্কার।

পরবর্তী যে ক্রিকেটারের কথা বলব সেটা হচ্ছে উমরান মালিক, ভারতের মাটিতে এই মুহূর্তে তার থেকে বেশি গতিতে বল করা কোন বোলার নেই এটা হলফ করে বলা যায়। কিন্তু তার সাথে ভারতীয় দলের সে নেই তার কারণ স্বরূপ অবশ্যই এটা হতে পারে যে ভারতীয় দলের সুযোগ পাওয়ার কম্পিটিশন অনেক বেশি কিন্তু ইমরানকে একটু ভালোভাবে তৈরি করে ভারতীয় দলে অবশ্যই যোগ করাতে পারতো বিসিসিআই। কারণ কোন বলার যদি ১৫০ এর উপরে বল করতে পারে তাহলে তাকে যদি ঠিক ভাবে তৈরি করা যায় তাহলে সে ঘাতক হতে পারে। যেমন পাকিস্তানের 150 কিমির বোলার হ্যারিস রউফ তিনি প্রচুর রান খান, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৪ ওভার বল করলে তিনি ৪০-৫০ রান দেওয়ার গ্যারান্টি দেন, কারণ তার মধ্যে সেই কোয়ালিটি নেই কিন্তু উমরান মালিককে ভালোভাবে ভারত তৈরি করলে অবশ্যই একটা ভালো বোলার পেতে পারবে টিম ইন্ডিয়া, কিন্তু তার উপর এই মুহূর্তে কোন ফোকাস করা হচ্ছে না, যার কারণে এই বোলার হারিয়ে যেতে চলেছে ভারতীয় ক্রিকেট থেকে।

অবশেষে যে ক্রিকেটারের কথা বলব তিনি আর কেউ নন, সকলের প্রিয় ক্রিকেটার শিখর ধাওয়ান। একটা লম্বা সময় ধরে তাকে ভারতীয় দলে জায়গা দেওয়া হচ্ছে না যদিও তার মধ্যে এখনো এক দুই বছর খেলার মত ক্ষমতা রয়েছে এবং সেটা তিনি আইপিএলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে দেখিয়েছেন কিন্তু তার সত্ত্বেও তাকে ভারতীয় দল রীতিমতো দলের বাইরেই রাখছে। তাই শিখর ধাওয়ান না চাইলেও তার ক্যারিয়ারের উপর ফুলস্টপ লাগিয়ে দিল বিসিসিআই।