ঝাঁপিয়ে এক হাতে অবিশ্বাস্য ক্যাচ আফগানিস্তানের উইকেট কিপার গুরবাজের

নাজমুল হোসেনের গতিপথটা একই হওয়ার সুযোগ ছিল না চেমসফোর্ডের এ রাতে। তবে টেক্টরের চতুর্থ সেঞ্চুরি ম্লান করে শেষ হাসিটা প্রথম ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি পাওয়া নাজমুলেরই।বৃষ্টির কারণে ৪৫ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের দেওয়া ৩২০ রানের লক্ষ্য বাংলাদেশ পেরিয়ে গেছে ৩ উইকেট ও ৩ বল বাকি থাকতেই। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়, ৩০০ বা এর বেশি রান করে পঞ্চম জয়। বড় রান তাড়ায় শুরুটা ঠিক ঝোড়ো হয়নি বাংলাদেশের, প্রথম পাওয়ার প্লেতে ৯ ওভারে ওঠে ৪০ রান, ফেরেন তামিম ইকবাল। ইনিংস বড় করতে পারেননি লিটন দাসও। জিততে হলে বাংলাদেশকে বিশেষ কিছুই করতে হতো। নাজমুল হোসেনের সেঞ্চুরি ও তাওহিদ হৃদয়ের ফিফটিতে সেটিই করেছে বাংলাদেশ দল। তবে এই দুর্দান্ত ইনিংস দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড করলেন নাজমুল হোসেন।

শুরুটা ঠিক ঝোড়ো হয়নি বাংলাদেশের, প্রথম পাওয়ার প্লেতে ৯ ওভারে ওঠে ৪০ রান, ফেরেন তামিম ইকবাল। শুরুর পরও ইনিংস বড় করতে পারেননি লিটন দাসও। প্রথম আশা জোগায় সাকিব আল হাসান ও নাজমুলের ৪৭ বলে ৬১ রানের জুটি। আক্রমণের শুরুটা করেন নাজমুল, এরপর যোগ দেন সাকিব। সে সময়ে ৪ ওভারে ওঠে ৪৩ রান। উইকেটের খোঁজে কার্টিস ক্যাম্ফারকে বোলিংয়ে ফেরান বলবার্নি, সফলও হন। স্ল্যাশ করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ তোলেন সাকিব। পরের গল্পটা নাজমুল ও হৃদয়ের। সাকিব ফেরার পর ৮ ওভারে দুজন তোলেন ৬১ রান। নাজমুল ফিফটি পূর্ণ করেন ৪৯ বলে, আগের ক্যারিয়ারসেরা ৭৩ রানকে ছাড়িয়ে যান দ্রুতই। পেসার, স্পিনার—কাউকেই তখন ছাড় দিচ্ছিলেন না দুজন।

```

হৃদয় ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি পান ৪৯ বলে, দুজনের সেঞ্চুরি জুটিতে লাগে ৮০ বল। নব্বইয়ের ঘরে দ্রুতই যাওয়ার পর সেঞ্চুরি পর্যন্ত যেতে একটু সময় নেন নাজমুল, অবশেষে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। মাইলফলকে যেতে তাঁর লাগে ৮৩ বল। নাজমুল ও হৃদয়ের জুটি ম্যাচ বের করে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছিল ভালোভাবেই, আয়ারল্যান্ডকে এরপর ব্রেকথ্রুটা এনে দেন ডকরেল। তাঁকে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন হৃদয়। তিনি ফিরলেও শট খেলা থামাননি নাজমুল, মুশফিকের সঙ্গে তাঁর জুটিটা অবশ্য বড় হয়নি। ডিপ মিড উইকেটে এ রাতের আরেক সেঞ্চুরিয়ান হ্যারি টেক্টরের হাতে ক্যাচ দেন নাজমুল। হৃদয়ের কথাটা আলাদা করে বললেন ওয়ানডে অধিনায়ক, ‘তরুণদের পারফরম্যান্সে আমি খুশি। বিশেষ করে হৃদয়। শুধু এই সিরিজে নয়, ঘরের মাঠেও সে ভালো খেলেছে। তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুটা খুবই ভালো হয়েছে। আশা করি সে অনেক দূর যাবে।’

এরপর বাংলাদেশের বড় ভরসা হয়ে ছিলেন মুশফিক, নেমে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন মিরাজও। কিন্তু ডকরেলের বলে মিরাজ এলবিডব্লু হলে একটু চাপ বাড়ে বাংলাদেশের। তাইজুল ইসলামকে নিয়ে এগোতে থাকেন মুশফিক, সমীকরণটা নাগালের মধ্যেই রাখেন তিনি। শেষের আগের ওভারে এসে তাইজুলকে এলবিডব্লু করে আয়ারল্যান্ডকে আবার আশা দেন জশ লিটল। এর আগেই রান আউট থেকে বেঁচে যান মুশফিক। ম্যাচ সেরার পুরস্কার নিতে এসে নাজমুলও জানিয়েছেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির অনুভূতি, ‘খুবই খুশি। আমার প্রথম সেঞ্চুরি।’ তবে ইনিংস লম্বা করার ক্ষেত্রে হৃদয়ের ভূমিকার কথাও বলেছেন তিনি, ‘ও আমার কাজটা সহজ করে দিয়েছে। ও যে গতিতে রান করেছে, আমার ব্যাটিংটা সহজ হয়েছে।’ দুজনের গড়ে দেওয়া মঞ্চে দাঁড়িয়ে তুলির শেষ আঁচড়টা দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। এতেই ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজেদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ।

```

ম্যাচ শেষে ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের মুখেও তাই শোনা গেল নাজমুল ও হৃদয়ের প্রশংসা। পুরস্কার বিতরণের মঞ্চে এসে তিনি বলছিলেন, ‘এই রান করা সম্ভব মনে হচ্ছিল। কারণ মাঠের আকৃতি ছোট। আর উইকেট খুবই ভালো। আমার মনে হয়েছে আজকের উইকেট প্রথম ম্যাচের থেকেও ভালো। আমাদের ম্যাচটাকে গভীরে নিতে হতো। কিন্তু আজ শুরুটা ভালো হয়নি। তবে আমি শান্ত ও হৃদয়ের ব্যাটিংয়ে খুবই খুশি। এই ধরনের মাঠে সাধারণত বাউন্ডারির খোঁজ করতে হয় না। মাঠের আকৃতির কারণে বাউন্ডারি এমনিতেই আসে।’