বৃহস্পতিবারের ওয়াংখেড়ে যেন স্মৃতির সরণীতে ডুবে গেল। এই দিনে স্টেডিয়ামে সচিন তেন্ডুলকরের মূর্তি উন্মোচনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল ভারত বনাম শ্রীলঙ্কার ম্যাচ। ক্রিকেটের কিংবদন্তি তারকা এদিন মাঠে উপস্থিত ছিলেন। এদিন বিরাট ব্যবধানে ম্যাচ জিতেছিল ভারত। এই ম্যাচে বিরাট কোহলির সঙ্গে দারুণ পার্টনারশিপ গড়েছিলেন শুভমন গিল। কোহলি-শুভমনের পার্টনারশিপ দেখে বড় মন্তব্য করলেন ভারতের প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রী। এদিনের ম্যাচের পরে শাস্ত্রী জানিয়েদিলেন ভারতের পরবর্তী সচিন তেন্ডুলকর-বিরাট কোহলি কে হতে চলেছেন।
আসলে এই ওয়াংখেড়েতেই ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচটিও অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ১২ বছর পরে ভারতীয় দল এই মাঠে যে ভাবে খেলল তা দেখে ধারাভাষ্য বক্সে থাকা রবি শাস্ত্রীও অবাক হয়েছেন। তাঁর কাছে বিরাট কোহলি এবং তরুণ শুভমন গিলের মধ্যে দ্বিতীয় উইকেটে ১৮৯ রানের অত্যাশ্চর্য জুটি হল ম্যাচের দারুণ একটা মুহূর্ত। এই জুটি দেখতে দেখতে প্রাক্তন ভারতীয় প্রধান কোচ রবি শাস্ত্রীর ২০১১ বিশ্বকাপের আইকনিক কোহলি-সচিন জুটির কথা মনে পড়ে গিয়েছে। মুম্বইয়ে ২০১১ সালের ফাইনালে ২৭৫ রান তাড়া করতে গিয়ে ভারতের শুরুটা ভালো হয়নি। লাসিথ মালিঙ্গা নতুন বলে দুবার আঘাত করে দ্বিতীয় ডেলিভারিতে বীরেন্দ্র সেহওয়াগকে শূন্য রানে আউট করেন এবং সচিনকে ১৪ বলে মাত্র ১৮ রানে সাজঘরে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
ওয়াংখেড়ে ভিড়কে পিন-ড্রপ করে প্যাভিলিয়নে ফেরার সময়ে ২২ বছর বয়সি কোহলি মাঠে নামেন। বিরাট মাঠে ঢোকার সময়ে সচিন তাঁকে থামিয়ে দেন। সেই সময়ে কোহলিকে সচিন বলেছিলেন একটি পার্টনারশিপ গড়ে তুলুন। সেদিন সেটাই করেছিলেন কোহলি। তিনি গৌতম গম্ভীরের সাথে ৮৩ রানের একটি জুটি গড়েন। ভারত শেষ পর্যন্ত ১০ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্য তাড়া করে। বৃহস্পতিবার, শাস্ত্রী, স্টার স্পোর্টসের সঙ্গে কথোপকথনের সময়ে সেই কথাটি মনে করেন। কোহলি গিলের সঙ্গে ১৮৯ রানের একটি পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন।
এই সময়ে রবি শাস্ত্রী বলেন, ‘গিল ইজ জেন নেক্সট’। শাস্ত্রী বলেছেন কোহলি-তেন্ডুলকরের মতোই খেলছেন গিল। এই সময়ে রবি শাস্ত্রী বলেন, ‘গিল হলেন নেক্সট জেনারেশন। তেন্ডুলকার, যখন ২০১১ বিশ্বকাপে ওয়াক আউট করেছিলেন, তখন কোহলির সঙ্গে কিছু কথা বিনিময় হয়েছিল, যিনি পরবর্তীতে এসেছিলেন, পিচ কেমন আচরণ করছে তা নিয়ে। তারপর আজ আমরা কোহলি এবং গিলকে একসঙ্গে ব্যাটিং করতে দেখছি, সেটা হল জেনারেশন নেক্সট। এরা চলে যাওয়ার পরে, তিনিই হবেন পরবর্তী রাজা।’
ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক নাসের হুসেন, যিনি আলোচনার অংশও ছিলেন, শাস্ত্রীর সঙ্গে একমত হন। তিনিও এটি মেনে নেন কারণ ইনিংসের শুরুতে গিল রান করেছিলেন যখন ওয়াংখেড়ে পরিস্থিতি কিছুটা কঠিন ছিল। নাসের হুসেন বলেন, ‘শুভমন গিল খুব দীর্ঘ সময় নিজের জায়গা ধরে রাখবেন। তিনি, রোহিতের মতো, ব্যাটিংকে সত্যিই সহজ করে দেন। এবং রবি শাস্ত্রী যেমন বলছিলেন এবং শ্রেয়স আইয়ার তাঁর সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, এটি সামনে সহজ ছিল না। বলটি থামছিল এবং আটকে ছিল, কিন্তু তিনি এটিকে খুব সহজ এবং আরামদায়ক করে তুলেছেন। তিনি ভবিষ্যতের সুপারস্টার হতে চলেছেন।’
সব মিলিয়ে ভারতীয় দলের ভবিষ্যৎ যে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত রয়েছে সেই নিয়ে কোন সন্দেহ নেই কারণ ভারতীয় দলের বেঞ্চে অনেক তরুণ এবং ভালো প্রতিভাবান ক্রিকেটার অপেক্ষা করছে তাদের সুযোগের জন্য।।