ফাইনাল ওভার থ্রিলারে পাকিস্তানকে একা হতে ধ্বংস করে ইতিহাস গড়লেন আসালঙ্কা !

এশিয়া কাপের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল শ্রীলংকা এবং পাকিস্তান আর পরিস্থিতি এরকম যে এই ম্যাচে যে জয়লাভ করবে এশিয়া কাপ ফাইনালে প্রবেশ করবে সেই দল এবং ভারতের বিরুদ্ধে ফাইনাল ম্যাচ খেলবে। শ্রীলংকা তার ঘরের মাটিতে খেলছে তাছাড়া যেভাবে তারা দাপটের সাথে ক্রিকেট খেলে যে বিগত কয়েক মাস, এমনকি ভারতীয় দল কেউ তারা যথেষ্ট টক্কর দিয়েছে সেই শ্রীলঙ্কাকে পাকিস্তানের মতো দল যে হারাতে পারবে না সেটা আগে থেকেই স্পষ্ট ছিল আর হলো ঠিক সেরকমই। তবে ম্যাচটি যে শেষ ওভারের শেষ বল পর্যন্ত যাবে সেটা হয়তো কেউ কল্পনা করতে পারেনি। আর শ্রীলংকার হয়ে এই ম্যাচে নায়ক হয়ে উঠলেন আসালঙ্কা।

জয়ের জন্য শ্রীলংকার শেষ ওভারে দরকার ছিল ৮ রান, ঠান্ডা মস্তিষ্কে সেই বের করলেন শ্রীলংকার এই যুব ক্রিকেটার। কখনো মনে হয়েছে হবে না, কখনো মনেভয়েছে হয়ে যাবে, ২ বলে দরকার ছিল ৬ রান, তখনও লড়াই করা ছাড়েন নি তিনি। গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে আসা পাকিস্তানের হাঁটু কাঁপতে থাকে শ্রীলংকার বোলিং লাইন আপের সামনে। একের পর এক উইকেট হারিয়ে রীতিমতো চলে যায় পাকিস্তান। বিখ্যাত বাবর আজম নেপালের মতো দল যতদিন না পারছেন ততদিন রান করবেন না বলে ঠিক করেছেন আর এরকম পরিস্থিতিতে নাক কাটা থেকে কোনরকম পাকিস্তানকে বাঁচায় মোহাম্মদ রিজওয়ান। ইনিংস এর শুরুতেই ধাক্কা খায় পাকিস্তান, ফখর জামানকে মাত্র ৪ রানে প্যাভিলিয়নের ফিরিয়ে দেয় মধুশান, বিখ্যাত ব্যাটসম্যান বাবর আজম মাত্র ২৯ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে যায়, অপর প্রান্তে দাঁড়িয়েছিলেন আব্দুল্লাহ শফিক যিনি হাফ সেঞ্চুরি করে কোনরকম দলকে বিপদের হাত থেকে বাঁচায়। ৪২ ওভারের এই ম্যাচে ১৩০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে পাকিস্তান।

এরপর একটা দুরন্ত ইনিংসে মোঃ রিজওয়ান ( ৮৬ রান) এবং ইফতিকার কোন রকমে দলকে ২৫০ রান পার করে, কিন্তু ২৫২ রান, এটা কোনভাবেই শ্রীলঙ্কার মত দলকে তাদের ঘরের মাটিতে এরকম একটা সেমিফাইনাল ম্যাচে পরাজিত করার জন্য যথেষ্ট হচ্ছিল না তার উপরে আবার পাকিস্তানের দুর্বল বোলিং লাইন আপ। প্রথমে উইকেট না পড়লে পাকিস্তান দল আর বিপক্ষ দলের উইকেট নিতে পারে না এটা এশিয়া কাপে ইতিমধ্যে ফাঁস হয়ে গেছে। ভারতের বিরুদ্ধেও তারা মিডিল ওভার উইকেট নিতে পারেনি আর শ্রীলংকার বিরুদ্ধেও তাই। পাকিস্তানের এই ছোট্ট টার্গেটের তাড়া করতে নেমে দুরন্ত ব্যাটিং শুরু করে শ্রীলংকা।

দীর্ঘদিন পর শ্রীলংকার ওয়ানডে দলের প্রত্যাবর্তন করা কুশল পারেরা প্রথম থেকেই অ্যাটিকিং ক্রিকেট খেলতে শুরু করে যেমনটা সে খেলতে অভ্যস্ত, শাহীন আফ্রিদিকে এদিক ওদিক বাউন্ডারি মারতে থাকে। দুর্ভাগ্যবশত তিনি রান আউট হয়ে ফিরে যান, তবে অপর প্রান্তে দুরন্ত ব্যাটিং করছিলেন নিসানকা যিনি ২৯ রানে আউট হয়ে ফিরে যান, আর তারপরেই দুরন্ত একটা পার্টনারশিপ শুরু করে শ্রীলংকা।

শ্রীলঙ্কা দলে অন্যতম দুর্দান্ত ব্যাটসম্যান সামারা বিক্রমা তিনি ব্যাট করতে আসেন এবং একের পর এক দুর্দান্ত চোখ ধাঁধানো শট খেলে পাকিস্তানকে এই ম্যাচ থেকে রীতিমতো বের করে দেন, তার সাথে পার্টনারশিপ করেন কুশল মেন্ডিস। অনবদ্য পার্টনারশিপে পাকিস্তান রীতিমতো চাপের মধ্যে পড়ে যায় এবং এই দুই ব্যাটসম্যান নিজেদের ইচ্ছেমতো রান করতে থাকে। কুশল মেন্ডিস একটি দুর্দান্ত হাফ সেঞ্চুরি করেন এবং শেষ পর্যন্ত নিজস্ব ব্যক্তিগত রান করেন এবং তার পাশাপাশি সামারা বিক্রমা তিনি ও তার ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যান এবং শেষ পর্যন্ত রান করেন। শ্রীলংকার এই অনবদ্য জয় পাকিস্তানকে রীতিমতো একটা বড় ধাক্কা দিয়েছে।

শেষ পর্যন্ত আসালঙ্কা দুরন্ত লড়াইয়ে শ্রীলংকা কে এই ম্যাচে জয় এনে দেয়।