রোহিতদের ব্যর্থতা সত্বেও রাহানে-শার্দুলের পার্টনার শিপে WTC ফাইনালে অনবদ্য রেকর্ড গড়লো ভারত !

ভারতীয় টপ অর্ডার যখন ল্যাজেগোবরে, তখন সপ্তম উইকেটে ভারতকে কিছুটা হলেও অক্সিজেন দিলেন অজিঙ্কা রাহানে এবং শার্দুল ঠাকুর জুটি। এই জুটি সপ্তম উইকেটে ১০৯ রান যোগ করে। যেটা ভারতকে ফলোয়ান বাঁচাতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে রাহানে-শার্দুল নজিরও গড়ে ফেলেন।অজিঙ্কা রাহানে এবং শার্দুল ঠাকুরই প্রথম ভারতীয় জুটি, যে জুটি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পার্টনারশিপে সেঞ্চুরি করল। আর অনবদ্য রেকর্ডের অধিকারী হলো।

ভারতীয় ব্যাটারদের এমনই হাল, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম সংস্করণের ফাইনালেও টিম ইন্ডিয়ার কোনও জুটি ১০০ রানের পার্টনারশিপের গণ্ডি টপকে নজির গড়তে পারেনি। এ বার দ্বিতীয় সংস্করণের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বাকি ব্যাটারদের হালও তথৈবচ। রবীন্দ্র জাদেজাকে ছাড়া। স্বাভাবিক ভাবেই বড় রানের পার্টনারশিপ গড়তে পেরেছে রাহানে এবং শার্দুল জুটিই।শুক্রবার অজিদের বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনের শুরুটাও ভারতীয় দলের একেবারেই ভালো হয়নি। বৃহস্পতিবার শেষবেলায় দুরন্ত ছন্দে ব্যাট করছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। কিন্তু তিনি ৪৮ রানে আউট হয়ে গিয়েছিলেন। আর এ দিন শুরুতেই ব্যক্তিগত মাত্র পাঁচ রানে সাজঘরে ফেরেন ভারতের কিপার-ব্যাটার শ্রীকর ভরত।

ম্যাচের আগে ভরত না ইশান কিষাণ, কিপার হিসাবে কাকে খেলানো উচিত, তা নিয়ে বহু বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু অজিদের বিরুদ্ধে বর্ডার-গাভাসকর ট্রফির সব টেস্ট ম্যাচ খেলা ভরতের উপরই এ বার নির্ভর করেছিল টিম ইন্ডিয়ার ম্যানেজমেন্ট। কিপিংটা ভালো করলেও, ব্যাট হাতে কিন্তু তিনি রাহানেকে সঙ্গ দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ ভরত। মাত্র ১৫২ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে নিশ্চিত ফলোঅনের দিকে যখন এগোচ্ছিল ভারত, তখন অজিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে রাহানেকে যোগ্য সঙ্গত করেন শার্দুল ঠাকুর।এর আগেও ইংল্যান্ডে শার্দুল নিজের ব্যাটিং দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন।

এ দিন তাঁকে নিয়েই লড়াই চালান রাহানে। দুই ব্যাটারই অজি আক্রমণের বিরুদ্ধে দক্ষতা দেখিয়েছেন। তাঁরা শুধু ক্রিজে টিকে থাকাই নয়, বরং সুযোগ পেলেই স্কোরবোর্ডে রানের গতি বাড়িয়েছেন। দুই ব্যাটারের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়ান বোলাররাও চাপে পড়ে গিয়েছিলেন। তবে রাহানে নিজে সেঞ্চুরি করতে পারেননি। ১২৯ বলে ৮৯ করে প্যাট কামিন্সের বলে ক্যামেরন গ্রিনকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন। তাঁর ইনিংসের রয়েছে ১১টি চার এবং ১টি ছয়। আর শার্দুল আবার ১০৯ বলে ৫১ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। ক্যামেরন গ্রিনের বলে তাঁর ক্যাচ ধরেন অ্যালেক্স ক্যারি। তাঁর ইনিংসে ৬টি চার হাঁকিয়েছেন শার্দুল।

তবে এই দুই ব্যাটার আউট হতেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে ভারতের ব্যাটিং। তারা মাত্র ২৯৬ রানে অলআউট হয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে করা ৪৬৯ রানের জবাবে ভারত প্রথম ইনিংসে ১৭৩ রানে পিছিয়ে পড়ে। ভারতের টপ-অর্ডারে খেলা রোহিত শর্মা (১৫), শুভমন গিল (১৩), চেতেশ্বর পূজারা (১৪), বিরাট কোহলিরা (১৪) চূড়ান্ত ফ্লপ। রবীন্দ্র জাদেজা তাও ৫১ বলে ৪৮ রান করেন। আর অক্সিজেন দেন রাহানে, শার্দুল। মূলত ভারতের টপ-অর্ডারের ব্যর্থতার জন্যই ব্যাটিংয়ে ভারতকে ল্যাজেগোবরে হতে হল।