“যুবরাজের জন্যই..”বিদায়বেলায় যুবিকে নিয়ে বড়ো মন্তব্য করলেন ব্রড! স্যালুট নেটিজেনদের!

ক্রিকেটার ইতিহাসে অনেক বোলার এসেছে গেছে কিন্তু স্টুয়ার্ট ব্রডের মতো উত্থান পতন হয়তো কেউ দেখেনি। এক ওভারে ছয়টি ছয় খাওয়া তাও আবার বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে সেখান থেকে বেরিয়ে এসে বিশ্বের অন্যতম দাপুটে টেস্ট বোলারে পরিণত হওয়া। চলতি অ্যাশেজ় টেস্টই তাঁর শেষ। শনিবারই স্টুয়ার্ট ব্রড জানিয়ে দিয়েছেন, পঞ্চম টেস্ট শেষ হলেই তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেবেন। সীমিত ওভারের ক্রিকেট থেকেই আগেই সরে গিয়েছিলেন তিনি। টেস্টে ছ’শোর বেশি উইকেট নিলেও অনেকে মনে করছেন, যুবরাজ সিংহের কাছে ছয় ছক্কার জন্যেই মনে থেকে যাবেন ব্রড। সে কথা অস্বীকার করেননি ইংরেজ পেসার নিজেও।

জানিয়েছেন, যুবরাজের জন্যেই আজ তাঁর এই সাফল্য।ম্যাচের পর সাংবাদিক বৈঠকে ব্রডের মন্তব্য, “সত্যি সেই দিনটা খুব কঠিন ছিল। তখন কত বয়স আমার? ২১, ২২। অনেক কিছু শিখেছিলাম সেই ম্যাচের পর। একটা মানসিক ধাক্কার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল আমাকে। বুঝতে পেরেছিলাম, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ম্যাচ জেতাতে গেলে এখনও অনেক পথ চলা বাকি আমার। নিজের প্রস্তুতি আরও বাড়িয়ে দিই। আগে আমার ফোকাস ছিল না। ম্যাচের আগে বল নিয়ে অনুশীলনও করতাম না। কিন্তু ওই ম্যাচের পর সব বদলে ফেলি।”২০০৭-এর ১৯ সেপ্টেম্বর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওই ঘটনা ঘটেছিল। ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড। ব্রড তখন তরুণ পেসার। ওই ওভারের আগেই অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল যুবরাজের। সেই রাগেই ছ’টা ছয় মেরেছিলেন তিনি। পরের ওভারে ফ্লিনটফকেও ছয় মারেন।

সেই ঘটনা নিয়ে ব্রড আরও বলেছেন, “কখনওই চাইনি এমন দিন আমাকে দেখতে হোক। তবে একটু শান্তি পেয়েছিলাম এটা ভেবে যে ম্যাচটার কোনও গুরুত্ব ছিল না। ওই ম্যাচটা হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাইনি। কিন্তু ওই ঘটনার জন্যেই আজ আমি এতটা সফল। আমায় প্রতিযোগী বানাতে সাহায্য করেছে ওই ঘটনা। আজ আমি যেখানে, তা ওই ম্যাচের জন্যেই।” স্টুয়ার্ট ব্রড তাঁর বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করে বলেছেন যে তিনি এখনও ভাবেন যে কেন যুবরাজ সিং তাঁকে ছয়টি ছক্কা মারলেন, যদি এটা না হত তাহলে ভালোই হত। ব্রড মনে করেন যদি এমনটা তাঁর ক্যারিয়ারে কখনও না ঘটত, তাহলে সেটা ভালোই হত। স্টুয়ার্ট ব্রড বলেন, ‘আমি সেই অভিজ্ঞতার পরেই নিজের ‘যোদ্ধা মোড’ তৈরি করতে শুরু করেছিলাম।’

স্টুয়ার্ট ব্রড আরও বলেছিলেন, ‘যদি আমার কেরিয়ারে এই ঘটনা না ঘটত। যাক পরে সত্যিই এটা আমাকে অনেক কিছুতে সাহায্য করেছিল। আমার মনে হয় না যে এই ঘটনার পরে আমরা শুধু বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে গিয়েছিলাম। এটা আমার জীবনে বড় প্রভাব ফেলেছিল। আমি মনে করি সেই দুর্ঘটনা আমাকে আজ আরও ভালো প্রতিযোগী হতে অনুপ্রাণিত করেছে এবং সেই ঘটনা আমাকে আজও এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।’ ৩৭ বছর বয়সি স্টুয়ার্ট ব্রড আরও বলেছিলেন যে তাঁর ক্যারিয়ারে অনেক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। এর পাশাপাশি ইংল্যান্ড টেস্ট দলের অধিনায়ক বেন স্টোকসেরও কথা বলেছেন তিনি।

স্টুয়ার্ট বললেন, ‘আপনি বড় উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যান এবং আপনি যখন স্টোকসির (বেন স্টোকস) মতো একজন খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ারের দিকে তাকান, তিনিও তাই করেছেন। এটি আবার বাউন্স করার ক্ষমতা এবং খারাপ দিনগুলিকে আপনার পিছনে রাখতে সাহায্য করে। গত ১৫ বা ১৬ বছরে একটি জিনিস আমি নিশ্চিতভাবে জানি যে আপনার ক্রিকেটে ভালো দিনের চেয়ে খারাপ দিনগুলি বেশি হবে। তাই আপনার ভালো দিনগুলি বাড়তে আপনাকে সেই খারাপ দিন গুলোর সঙ্গে মোকাবেলা করতে হবে।’